বুদ্ধিতে মানুষকে ছাড়াবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার আসন্ন ভয়াবহতা নিয়ে কথা বলতে টেক জায়ান্ট গুগলে নিজের অবস্থান ছেড়ে দিয়েছেন ‘এআই’ গডফাদার হিসেবে পরিচিত ব্রিটিশ কানাডীয় কগনেটিভ মনোবিজ্ঞানী ও কম্পিউটার বিশেষজ্ঞ জিওফ্রে হিন্টন। তিনি গুগলের সঙ্গে গত এক দশক ধরে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিয়ে কাজ করছেন। কিন্তু এখন এই প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করায় ও এটিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ায় নিজের ভূমিকার জন্যও তিনি উদ্বিগ্ন।

হিন্টন নিউইয়র্ক টাইমসকে বলেছিলেন, ‘আমি স্বাভাবিক অজুহাত দিয়ে নিজেকে সান্ত্বনা দেই, যদি আমি এটি না করতাম তবে  অন্য কেউ করত।’ সেই নিউইয়র্ক টাইমসই তার গুগল ছাড়া নিয়ে প্রথম প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।

বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ৭৫ বছর বয়সী এই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বিশেষজ্ঞ এআইকে বেশ ভীতিকর উল্লেখ করে বলেন, ‘এখনও তারা আমাদের থেকে বুদ্ধিমান নয়। আমি যতদূর বলতে পারি, সম্ভবত শিগগিরই তারা তা হবে (মানুষের থেকেও বুদ্ধিমান)।’

সোমবার ( ১ মে) এক টুইট বার্তায় হিন্টন গুগল ছাড়ার কারণ সম্পর্কে বলেন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিয়ে নির্দ্বিধায় কথা বলতে এবং বিশেষ করে গুগলের কর্মকাণ্ডের সমালোচনা করার ইচ্ছার কারণে তিনি সরে দাঁড়িয়েছেন।

এদিকে গুগলের প্রধান বিজ্ঞানী জেফ ডিন বলেছেন, হিন্টন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তায় মৌলিক সাফল্য এনেছেন। ডিন গুগলে ১ দশকের অবদানের জন্য হিন্টনের প্রশংসাও করেছেন। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার হুমকির বিষয়ে সিএনএনকে দেওয়া এক বিবৃতিতে ডিন বলেছেন, ‘আমরা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার দায়িত্বশীল পদ্ধতির প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমরা ক্রমাগত বাড়তে থাকা ঝুঁকিগুলো বুঝতে শিখেছি এবং সাহসের সঙ্গে এ প্রযুক্তি উদ্ভাবন করছি।’

হিন্টনের গুগল থেকে সরে দাঁড়ানোর বিষয়টি এমন সময় এলো যখন বেশ কয়েকজন আইন প্রণেতা, কয়েকটি অ্যাডভোকেসি গ্রুপ এবং এ প্রযুক্তির অভ্যন্তরীণ ব্যক্তিরা ভুল তথ্য ছড়িয়ে দেওয়ার এবং চাকরি থেকে মানুষকে হটানোতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা চালিত চ্যাটবটগুলোর ভূমিকা নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন।

এ ছাড়া মার্চে ইলন মাস্ক সমর্থিত ‘ফিউচার অফ লাইফ’ নামের একটি সংগঠন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে প্রশিক্ষিত করার ওপর ৬ মাসের স্থগিতাদেশের আহ্বান জানিয়ে বিবৃতি দেয়। এটি এমন সময় এসেছিল যখন চ্যাটজিপিটির সবশেষ সংস্করণ ‘জিপিটি-৪’ নিজের সক্ষমতা দেখিয়ে প্রযুক্তিবিদদের হতবাক করে দেয়।

বর্তমানে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি নিয়ে গবেষণায় ওপেনএআই, গুগল অগ্রভাগে থাকলেও এরই মধ্যে এটি নিয়ে জোরালোভাবে কাজ শুরু করেছে আইবিএম, অ্যামাজন, বাইদু ও টেনসেন্ট। এমনকি ইলন মাস্কও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা চ্যাটবট নিয়ে কাজ করতে নতুন প্রতিষ্ঠান শুরু করেছেন।