বাংলাদেশের নির্বাচন কীভাবে হবে, তা নির্ধারণ করবে জনগণ; যুক্তরাষ্ট্র এ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করবে না। এমনটাই জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতরের উপ-প্রধান মুখপাত্র বেদান্ত প্যাটেল।
ওয়াশিংটনে স্থানীয় সময় সোমবার (১ মে) মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের এক ব্রিফিংয়ে সময় সংবাদের ওয়াশিংটন প্রতিনিধি দস্তগীর জাহাঙ্গীরের এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি।
যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের গণতন্ত্রের গুরুত্বপূর্ণ সহযোগী। বাংলাদেশ দ্রুতই একটি জাতীয় নির্বাচনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্র এ পরিস্থিতিকে কীভাবে দেখছে, যেখানে একটি দল নির্বাচনে অংশ নিতে চাইছে না। অথচ পরবর্তীতে বলতে পারে, নির্বাচন সুষ্ঠু ও অবাধ হয়নি-সময় সংবাদের এমন প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্র দপ্তরের উপ-প্রধান মুখপাত্র বলেন, বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্র একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন চায়, যেখানে বাংলাদেশি জনগণের মতামতের প্রতিফলন ঘটবে। তবে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের নির্বাচনে হস্তক্ষেপ করবে না।
যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের মধ্যকার সম্পর্ক আরও শক্তিশালী হবে উল্লেখ করে বেদান্ত প্যাটেল আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশ গত বছর কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর উদ্যাপন করেছে এবং সেই সম্পর্ক সামনে এগিয়ে নেয়ার ব্যাপারে ওয়াশিংটন আরও মনযোগী।
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতার ব্যাপক সুযোগ ও সম্ভাবনা রয়েছে। জলবায়ু বলেন, অর্থনীতি বলেন ও মানবিক সহায়তা বলেন প্রভৃতি ক্ষেত্রে একসঙ্গে কাজ করছে দুই দেশ।
মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এ বক্তব্য এমন সময়ে এলো যখন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যুক্তরাষ্ট্র সফর করছেন। এ সফরকালে এরই মধ্যে বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান উন্নয়ন সহযোগী আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন।
এ সাক্ষাৎকালে বাংলাদেশের অভূতপূর্ব অগ্রগতির প্রশংসা করে ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা বলেছেন, সব প্রতিবন্ধকতা মোকাবিলা করে সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে যেতে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মতো নেতৃত্ব প্রয়োজন।
রোববার (৩০ এপ্রিল) ওয়াশিংটনে দ্য রিটজ-কার্লটন হোটেলের সভাকক্ষে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে একটি প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন আইএমএফ প্রধান। বৈঠক শেষে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের বিস্তারিত জানান।
আইএমএফ প্রধান বলেন, ‘বাংলাদেশ বিশ্বের একটি রোল মডেল… শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে দেশটি বিভিন্ন ক্ষেত্রে নজিরবিহীন অগ্রগতি করেছে। সব প্রতিবন্ধকতা মোকাবিলা করে তাই সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে যেতে তার (শেখ হাসিনা) মতো নেতৃত্ব প্রয়োজন।’ জর্জিয়েভা করোনা মহামারির সময়েও বাংলাদেশের সামষ্টিক অর্থনীতিতে স্থিতিশীলতা বজায় রাখার প্রশংসা করেন।
ব্যাপক অবকাঠামোগত উন্নয়ন, সংযোগ স্থাপন এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় বাংলাদেশ উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে বলেও উল্লেখ করেন ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা। বৈঠকে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী দেশের সার্বিক উন্নয়ন নিশ্চিত করতে তার সরকারের উদ্যোগ সম্পর্কে আইএমএফ প্রধানকে অবহিত করেন। তিনি বলেন, দেশের উন্নয়ন একদিনে হয়নি; বরং এটা দীর্ঘদিনের পরিকল্পনার ফল।
সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আবদুর রউফ তালুকদার, অর্থ বিভাগের সিনিয়র সচিব ফাতিমা ইয়াসমিন এবং অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব শরিফা খান উপস্থিত ছিলেন।