সরকার বিএনপির আন্দোলনকে বন্ধ করতে ভয়াবহ পরিকল্পনা নিয়ে মাঠে নেমেছে বলে অভিযোগ করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, সরকার বিরোধীদলের সাড়ে ১৩০০ মামলা নিয়ে মাঠে নেমেছে। আগামী নির্বাচনের আগে কীভাবে এই মামলাগুলো দ্রুত শেষ করে বিএনপি নেতাদের সাজা দিয়ে কারাগারে পাঠনোর যায় সেই চেষ্টা করছে। যাতে নির্বাচনে প্রতিপক্ষ ছাড়া খালি মাঠে গোল দিতে পারে।
বুধবার (৩১ মে) জাতীয় প্রেসক্লাবে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের দ্বিবার্ষিক সাধারণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, যে মামলা হাইকোর্ট খারিজ করে দিয়েছেন, পুনরায় শুনানি করে সেসব মামলায় রাজনৈতিক নেতাদের সাজা দেওয়া হচ্ছে। মৃত্যু ঘনিয়ে আসার আগে যখন আর কোনোরকম আশা থাকে না, তখন মানুষ যে কোনো কিছু আঁকড়ে ধরার চেষ্টা করে, সরকার হামলা-মামলা দিয়ে সে চেষ্টাই করছে।
তিনি আরও বলেন, একইভাবে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও তার স্ত্রী জেবায়দা রহমানের ২০০৭ সালের মামলাগুলো অতিদ্রুত চালু করা হয়েছে। আত্মপক্ষের সুযোগ দেওয়া হচ্ছে না। প্রতিদিন সাক্ষী হাজির করা হচ্ছে। এ নিয়ে কোর্টে বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা কথা বলতে চাইলে তাদের ওপর সরকারি দলের আইনজীবীরা হামলা করে এবং পুলিশ দিয়ে নির্যাতন চালায়। প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে সরকার এমন নোংরা ষড়যন্ত্র করছে।
একই ধরনের মামলায় আওয়ামী লীগের নেতা মোফাজ্জেল হোসেন চৌধুরী মায়াকে খালাস দেওয়া হয়েছে এবং ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু ও তার স্ত্রীকে সাজা দেওয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ করেছেন মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, সম্প্রতি সারা দেশে এ পর্যন্ত গ্রেপ্তার হয়েছেন সাত শতাধিক। গত ১২ দিনে নতুন মামলা হয়েছে ১৫২টি। আসামি সাড়ে পাঁচ হাজার। ভয়-ত্রাস সৃষ্টি করে একই কায়দায় নির্বাচনী বৈতরণী পার হতে চায় তারা। কিন্তু মানুষ এবার তা সফল হতে দেবে না।
যুক্তরাষ্ট্রের ভিসানীতি নিয়ে ক্ষমতাসীন নেতৃবৃন্দের বক্তব্যের প্রসঙ্গ টেনে বিএনপি মহাসচিব বলেন, এখন আওয়ামী লীগ বলছে, যুক্তরাষ্ট্র তো অংশগ্রহণমূলক ভোটের কথা বলেনি। এতে তারা মজা পাচ্ছে। কিন্তু আমাদের সংবিধান অনুযায়ী গ্রহণযোগ্য নির্বাচন তখনই হবে, যখন তা অংশগ্রহণমূলক হবে।
গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, এতদিন শুধু সরকারের দমন-পীড়নের শিকার বা ভুক্তভোগীরা কথা বলতেন- সাংবাদিকদের পক্ষে যতটুকু সম্ভব ছিল, তা প্রকাশ করতেন। এখন সারা বিশ্ব বলছে যে বাংলাদেশে স্বাধীনভাবে মতপ্রকাশ করা ও কথা বলার সুযোগ নেই। এখন শুধু আমাদের বলতে হয় না, যারা মুক্তমনা তারা সবাই বলছেন।