চট্টগ্রাম : প্রায় ১৮ ঘণ্টা পর সীতাকুণ্ডের গুলিয়াখালী সমুদ্র উপকূলে ভেসে উঠেছে নিখোঁজ পর্যটক মেহেদী হাসানের মরদেহ। বৃহস্পতিবার (৬ জুন) ভোর সাড়ে ৬টায় গুলিয়াখালী খালে মাটির সাথে আটকা অবস্থায় তার মরহেদটি দেখতে পান জেলেরা। পরে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের উপস্থিতিতে পানি থেকে তার মরদেহটি উদ্ধার করে আনা হয়। জেলেরা জানিয়েছেন, দীর্ঘ সময় পানিতে থাকার কারণে মেহেদী হাসানের মরদেহ কিছুটা ফুলে গেছে।
নিহত মেহেদী হাসান কুমিল্লা জেলার কোতয়ালী থানার গোবিন্দপুর এলাকার ওমর ফারুকের ছেলে। তিনি কুমিল্লা মর্ডান হাইস্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্র।
এর আগে গতকাল বুধবার দীর্ঘ ৫ ঘণ্টা উদ্ধার অভিযানের পরও সন্ধান মেলেনি গুলিয়াখালী সমুদ্র সৈকতে গোসল করতে নেমে নিখোঁজ মেহেদী হাসানের। গতকার দুপুর ২ টা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টা পর্যন্ত সাগরের বিভিন্ন পয়েন্টে অভিযান চালিয়ে তাকে পাওয়া না গেলে উদ্ধার কার্যক্রম সমাপ্ত করে ফিরে আসতে হয় ফায়ার সার্ভিসের ৩ সদস্যের ডুবুরি দলকে।
জানা যায়, বুধবার সকালে কুমিল্লা মর্ডান হাইস্কুল থেকে ১৪ জনের একটি স্কুল শিক্ষার্থী দল সীতাকুণ্ডের গুলিয়াখালী সমুদ্র সৈকতে ঘুরতে আসেন। তাদের মধ্যে কয়েকজন জোয়ারের সময় সমুদ্রের পানিতে গোসল করতে নেমে পড়েন। একপর্যায়ে তিন বন্ধু হঠাৎ পানিতে ডুবে যায়। শিহাব ও তার এক বন্ধু কোনমতে কেওড়া গাছের একটি শিকড় ধরে কূলে উঠে আসলে প্রাণে বাঁচেন। তবে বেশ কয়েক ঘণ্টা অজ্ঞান ছিলেন শিহাব। হাসপাতালে ভর্তির কয়েক ঘণ্টার পর তার জ্ঞান ফিরে আসে। তবে তাদের বন্ধু মেহেদী হাসান (১৬) তখনও নিখোঁজ ছিলেন। সাগরে পর্যটক ডুবির খবর পেয়ে দুপুর দেড়টায় নিখোঁজ মেহেদী হাসানকে উদ্ধারে অভিযান শুরু করে আগ্রাবাদ ফায়ার সার্ভিসের ৩ সদস্যের ডুবুরি দল ও সীতাকুণ্ড ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। দীর্ঘ ৫ ঘন্টা সাগরের বিভিন্ন পয়েন্টে অভিযান চালিয়েও মেহেদী হাসানের সন্ধান মেলেনি গতকাল। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দলকে উদ্ধার অভিযান প্রথম দিনের মতো সমাপ্ত করে ফিরে আসতে হয়।
সীতাকুণ্ড সদর ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র স্টেশন অফিসার মো. নুরুল আলম দুলাল বলেন, গতকাল বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় আমাদের প্রথম দিনের অভিযান সমাপ্ত করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার ভোরে স্থানীয় জেলেরা মেহেদী হাসানের মরদেহ উদ্ধার করে আমাদের জানায়। বর্তমানে নিহতের মরদেহ পরিবারকে হস্তান্তর করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত ৩ জুলাই (রবিবার) মিরসরাইয়ের বড় দারোগারহাটস্থ পাহাড়ের রূপসী ঝর্ণায় ভ্রমণে এসে প্রাণ হারান নগরীর ফিরোশাহ কলোনী এলাকার আবছার (১৯) ও আরিফ (২০) নামে দুুই তরুণ। তারাও ৯ বন্ধু মিলে সেখানে ঘুরতে গিয়েছিলেন। তারা সবাই মাধ্যমিকের শিক্ষার্থী। তার আগের দিন শনিবার সীতাকুণ্ডের পন্থিছিলার ঝরঝরি ঝর্ণায় সেলফি তুলতে গিয়ে খাদে পড়ে আসিফ (২১) নামে এক পর্যটক প্রাণ হারান। আসিফের বাড়ি চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলার কৈয়গ্রাম এলাকায়।