গত ১ আগস্ট থেকে চট্টগ্রামে বৃষ্টিপাত শুরু হয়। ৪ আগস্ট নগরী ও জেলায় বন্যা দেখা দেয়। ধীরে ধীরে পরিস্থিতি অবনতি হতে থাকে। এরমধ্যে ৭ আগস্ট পর্যন্ত চার দিন টানা জলাবদ্ধতা ছিল চট্টগ্রাম নগরীতে। অপরদিকে জেলার ১৫ উপজেলার মধ্যে ১৪টি উপজেলায় এখনও কিছু কিছু এলাকায় বন্যায় দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে মানুষকে। জেলার সাতকানিয়া, চন্দনাইশ, লোহাগাড়া, ফটিকছড়ি ও হাটহাজারী উপজেলায় এখনও হাজার হাজার বাড়িঘর পানির নিচে ডুবে ছিল। সবচেয়ে বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে সাতকানিয়া, লোহাগাড়া ও চন্দনাইশ উপজেলায়।
চট্টগ্রাম জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. সাইফুল্লাহ মজুমদার বলেন, ‘বন্যায় চট্টগ্রাম নগরী ও জেলায় ১৫ জন মারা গেছেন। এরমধ্যে সাতকানিয়ায় ছয়, লোহাগাড়ায় চার, চন্দনাইশে দুই, রাউজানে এক, বাঁশখালীতে এক ও মহানগরীতে একজন মারা গেছেন। প্রাথমিকভাবে বন্যায় ক্ষয়ক্ষতি পরিমাণ নির্ধারণ করা হয়েছে ১৩৫ কোটি টাকা।’
তিনি বলেন, ‘জেলার সন্দ্বীপ ছাড়া বাকি ১৪ উপজেলায় কমবেশি বন্যা দেখা দিয়েছে। পানিবন্দি মানুষের জন্য শুকনো খাবার দেওয়া হয়েছে। দেওয়া হয়েছে পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেটসহ প্রয়োজনীয় ত্রাণসামগ্রী।’
চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন সূত্র জানিয়েছে, ১৪টি উপজেলা এবং সিটি করপোরেশনের মধ্যে এক লাখ ৪০ হাজার ১২টি পারিবারের ছয় লাখ ৩৫ হাজার ১৩০ জন লোক বন্যায় পানিবন্দি হয়ে পড়েন।
এরমধ্যে মীরসরাই উপজেলার চারটি ইউনিয়নের পাঁচ হাজার ৯০ পরিবারের ২০ হাজার ৩৬০ জন, ফটিকছড়ির এক ইউনিয়নের ৯০ পরিবারের ৪৫০ জন, সীতাকুণ্ডের ৯ ইউনিয়নের দুই হাজার ৮৬২ পরিবারের ১৫ হাজার ২৬০ জন, হাটহাজারীতে ১৫ ইউনিয়নের ৫০ হাজার পরিবারের দুই লাখ, রাউজানে ১৪ ইউনিয়নের ১৯ হাজার পরিবারের ৭৫ হাজার, রাঙ্গুনিয়ায় ১৫ ইউনিয়নের ২৫০ পরিবারের এক হাজার ২০০, বোয়ালখালীতে ৬ ইউনিয়নের ৫৫০ পরিবারের দুই হাজার ৭৫০, পটিয়ায় ১৮ ইউনিয়নের ১৬ হাজার ৫৯৫ পরিবারের ৫৩ হাজার ৩১০, কর্ণফুলী উপজেলার ৫ ইউনিয়নের এক হাজার ৮৫০ পরিবারের ৯ হাজার ২৫০, আনোয়ারায় ১১ ইউনিয়নের এক হাজার ৪২৫ পরিবারের ৮ হাজার ৫০, চন্দনাইশে ১০ ইউনিয়নের পাঁচ হাজার পরিবারে ২৫ হাজার, সাতকানিয়ায় ১৭ ইউনিয়নের ২২ হাজার ৫০০ পরিবারে ৯০ হাজার জন, লোহাগাড়ায় ৯ ইউনিয়নের ৮০ হাজার, বাঁশখালীতে ১৫ ইউনিয়নে ১০ হাজার পরিবারের ৫০ হাজার ৫০০ ও সিটি করপোরেশনের মধ্যে ৮০০ পরিবারের চার হাজার জন পানিবন্দি ছিলেন।