বাংলাদেশ রেলওয়ের চাকরিতে অ্যাটেনডেন্ট (পরিচার্যক) মন্টু কুমার দাশের শেষদিন ছিল গত শুক্রবার (১১ আগস্ট)। প্রতিদিনের ন্যায় তিনি রেল পূর্বাঞ্চলের ঢাকা থেকে সিলেটগামী জয়ন্তিকা এক্সপ্রেসে দায়িত্ব পালন করছিলেন। সেদিন ওই ট্রেনেই চাকরির প্রথম দিন ছিল তারই ছেলে সজীব কুমার দাশের (২৮)। পরিচালক (গার্ড) হিসেবে চাকরিতে দায়িত্ব পালন করা সজীবের অধীনেই থাকার কথা মন্টু কুমার দাশ। ট্রেন ছাড়ার আগ মুহূর্তে স্টেশনে দেখা হয় বাবা-ছেলের। উপস্থিত যাত্রীদের সামনে বাবাকে প্রণাম করেই দায়িত্বে যোগ দেন সজীব।
এমনই আবেগঘন ঘটনাটি ঘটেছে ঢাকার কমলাপুর রেলস্টেশনে। বাবার আশীর্বাদ নিয়ে ছেলেসহ যাত্রীসেবায় সকাল ১১টায় আন্তঃনগর ট্রেন নিয়ে ছুটেন সিলেটের উদ্দেশ্যে। স্টেশনে উপস্থিত যাত্রীরাও বাবার প্রতি ছেলের এই সম্মানের প্রতি সহানুভূতি জানায়।
জানা গেছে, ৬০ বছর বয়সী মন্টু কুমার দাশ ৩০ বছরেরও বেশি সময় ধরে অ্যাটেনডেন্ট (পরিচার্যক) পদে চাকরি করেছেন বাংলাদেশ রেলওেেয়তে। মন্টু কুমার দাশের বিবিএ পাস ছেলে সজীব কুমার দাশেরও চাকরি হয় রেলওয়েতে। বিভিন্ন ট্রেনিং করে নিজেকে তৈরির পর গার্ড হিসেবে চাকরিতে যোগদানের দিন ছিল শুক্রবার (১১ আগস্ট)। ওইদিন কর্মজীবনের শেষদিন ছিল মন্টু কুমারের। কাকতালীয়ভাবে বাবার চাকরির শেষ দিনে ছেলের নতুন চাকরি জীবনের শুভসূচনা হয়ে যায়।
ছেলের অধীনেই দায়িত্ব পালন করার কথা মন্টু কুমারের। কিন্তু পদবির দিকে বড় হলেও সজীব তার বাবাকে সম্মান জানাতে ভুলেননি। তার এমন আচরণে ট্রেনে দায়িত্ব পালন করা অন্যান্য কর্মচারীরা আবেগাপ্লুুত হয়ে পড়েন।
এই বিষয়ে জানতে চাইলে সজীব কুমার দাশ বলেন, ‘বাবার সঙ্গে একই ট্রেনে দায়িত্ব পালন করা আমার জীবনের শ্রেষ্ঠ প্রাপ্তি। আমার চাকরি জীবনের সূচনার দিনই ছিল বাবার চাকরির শেষদিন। বাবার আশীর্বাদ দিয়ে দিনটির সূচনা করতে পেরেছি আমি, এটার চেয়ে বেশি আর কি পাওয়ার আছে।’