অসমাপ্ত কাজ শেষ করতে নৌকায় ভোট চাইলেন শেখ হাসিনা

অসমাপ্ত কাজ শেষ করতে আবারও নৌকায় ভোট চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এসময় বিএনপি-জামায়াতের সমালোচনা করে সরকারপ্রধান বলেন, আওয়ামী লীগ দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করে, আর বিএনপি-জামায়াত ধ্বংস করে।

শনিবার বিকেলে কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলার মাতারবাড়ি টাউনশিপ মাঠে আওয়ামী লীগের জনসভায় এ কথা বলেন তিনি।

নৌকায় ভোট দেওয়ার কারণেই দেশের উন্নয়ন হচ্ছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়। আওয়ামী লীগ মানুষের কল্যাণে কাজ করে। আমরা চাই আপনারা সুন্দরভাবে বাঁচুন। প্রত্যেক মানুষ সুন্দরভাবে বাঁচবে সে লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছি। যাতে মানুষ কষ্টে না থাকে, সেভাবেই কাজ করে যাচ্ছি। আপনাদের জীবনমান যাতে উন্নত হয়, নিরাপদ হয়, সে লক্ষ্যেই কাজ করছি।

তিনি বলেন, বিএনপি করে হত্যা-অগ্নিসন্ত্রাস। তারা মানুষের কল্যাণে কাজ করতে পারে না। বিএনপি-জামায়াতের মনুষ্যত্ববোধ নেই, তাই জনগণকে তাদের বিষয়ে সাবধান থাকতে হবে।

মূল্যস্ফীতি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যখন রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হয়, তখন নিষেধাজ্ঞা-পাল্টা নিষেধাজ্ঞা, ফলে মুদ্রাস্ফীতি একটু বেড়েছে। কিন্তু সেটাও নিয়ন্ত্রণে আমরা চেষ্টা চালিয়েছি। খুব শিগগির মূল্যস্ফীতি হ্রাস পাবে। মানুষ আরও ভালোভাবে চলতে পারবে বলে আশা করি।

শেখ হাসিনা বলেন, ১৫ বছরের আগের বাংলাদেশ আর আজকের বাংলাদেশের মধ্যে অনেক পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসেছে বলেই দেশের পরিবর্তন হয়েছে। আপনারা নৌকায় ভোট দিয়েছেন বলেই আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসেছে। আগামী নির্বাচনেও আমরা চাইবো, আপনাদের ভোটের মাধ্যমে আপনাদের সেবা করতে পারি, যে কাজগুলো এখনো শেষ হয়নি সেগুলো শেষ করতে পারি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি যেদিন বাংলাদেশে ফিরে এসেছি, সেদিন আমার কেউ ছিল না। যাদের রেখে গিয়েছিলাম, এসে পেয়েছি সারি সারি কবর। আপনাদের মাঝেই আমি ফিরে পেয়েছি আমার বাবার স্নেহ, মায়ের স্নেহ, ভাইয়ের স্নেহ। কাজেই আপনাদের কল্যাণের জন্য, আপনাদের উন্নয়নের জন্য আমি যে কোনো ত্যাগ স্বীকারে প্রস্তুত। প্রয়োজনে বাবার মতো বুকের রক্ত দিতেও প্রস্তুত আছি। শুধু আপনাদের কল্যাণ করাটাই আমার একমাত্র কাম্য। আমি আপনাদের কাছে দোয়া চাই।

বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করে তিনি বলেন, বাবা-মা, ভাই, সব হারিয়েছি। আমাদের হারাবার আর কিছু নেই, পাওয়ারও কিছু নেই। শুধু একটাই কাজ- বাংলাদেশের মানুষ যেন ভালো থাকে। যেভাবে আমার বাবা স্বপ্ন দেখেছিলেন ক্ষুধামুক্ত, দারিদ্র্যমুক্ত, উন্নত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তোলা। সেই বাংলাদেশই আমি গড়ে তুলতে চাই। আমার বাবার স্বপ্নটাই পূরণ করতে চাই।

এর আগে শনিবার দুপুরে কক্সবাজারে আইকনিক রেলস্টেশন ও দোহাজারী-কক্সবাজার রেলপথের উদ্বোধন করে ট্রেনে রামুতে যান প্রধানমন্ত্রী। এরপর বিকেল ৩টা ৪০ মিনিটের দিকে মাতারবাড়ী তাপবিদ্যুৎ প্রকল্পের টাউনশিপ মাঠে মহেশখালী উপজেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় পৌঁছান।

জনসভায় বক্তব্য দেওয়ার আগে তিনি মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দর চ্যানেল উদ্বোধন এবং প্রথম টার্মিনাল নির্মাণ কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। এছাড়া কক্সবাজারে ৫৩ হাজার কোটি টাকার আরও ১৬টি প্রকল্প উদ্বোধন করেন।

এগুলো হলো- বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের অধীনে নির্মিত মাতারবাড়ি ১২০০ মেগাওয়াট কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র, সাবমেরিন ক্যাবলের মাধ্যমে দ্বীপ উপজেলা কুতুবদিয়ায় জাতীয় গ্রিডের বিদ্যুৎ সংযুক্তি প্রকল্প। বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের অধীনে বাঁকখালী নদীর কস্তুরাঘাটে ৫৯৫ মিটার পিসি বক্স গার্ডার ব্রিজ, কক্সবাজার সদরে খাল লাইনিং অ্যাপ্রোচ রোড ও ব্রিজ। স্থানীয় সরকার, পল্লি উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের ৪টি প্রকল্প, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ৪টি, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের একটি প্রকল্প। এছাড়া রয়েছে জনস্বাস্থ্য, গণপূর্ত এবং বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের বাস্তবায়নাধীন ৩টি প্রকল্প।