মৌলবাদীরা যতই হুঙ্কার দিচ্ছে, রবীন্দ্রচর্চা ততই আরও বেশি প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠছে বলে মন্তব্য করেছেন অর্থ প্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা আয়শা খান। মৌলবাদ ঠেকাতে রবীন্দ্রচর্চার আহ্বান জানান তিনি।
শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) রাতে জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে রবীন্দ্রসঙ্গীত উৎসবে তিনি একথা বলেন। বাংলাদেশ রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী সংস্থা এ উৎসবের আয়োজন করে।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে অর্থ প্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা আয়শা খান বলেন, ‘আমরা যে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে চিনি এবং জানি, তিনি আমাদের বাঙালির অস্তিত্ব, তিনি আমাদের একান্ত নিজের মানুষ। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কৃতিত্ব এই যে, তিনি আমাদের মনের সব কথা একাই বলে গেছেন। একশো বছর পরের কথাও বলে গেছেন অনায়াসে।’
বাঙালি মননকে বিস্তৃত করতে রবীন্দ্রচর্চা বেশি প্রয়োজন মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বিস্তৃত মহাসমুদ্রসম রচনাসমগ্র রেখে গেছেন। সারাবিশ্ব এক ধরনের আগ্রাসনের মধ্য দিয়ে অস্থির সময় পার করছে। মৌলবাদীরা হুঙ্কার দিচ্ছে। এসময় রবীন্দ্রনাথই হতে পারে বাঙালির আশ্রয়। এ মুহূর্তে রবীন্দ্রচর্চা আরও বেশি প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছে।’
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ বইয়ের প্রসঙ্গ টেনে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু যখন সংকটে পড়েছেন, জেল-জুলুম ওনার জীবনে যখন অনিবার্য হয়ে উঠেছে, তখনই রবীন্দ্রনাথের আশ্রয় নিয়েছেন। রবীন্দ্রনাথের কাছ থেকে মনে সাহস নিয়েছেন। বিপদে মোরে রক্ষা করও- এ নহে মোর প্রার্থনা— কবিতা থেকে সাহস সঞ্চয় করেছেন। বঙ্গবন্ধু রবীন্দ্রনাথের গানকে বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত করেছেন।’
‘আমরাও ছোটোবেলা থেকে পারিবারিকভাবে সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডলে বড় হয়ে উঠেছি। রবীন্দ্রনাথসহ আরও যারা বরেণ্য সাহিত্যিক আছেন, তাদের ক্লাসিক লেখাগুলো পড়েই আমাদের মনোজগতকে বিস্তৃত করেছি। পারিবারিকভাবেই সন্তানের মধ্যে সাংস্কৃতিক চেতনাটা জাগ্রত করে দিতে হবে। তাহলে আমরা অসাম্প্রদায়িক, মানবিক প্রজন্ম পাব’,— বলেন প্রতিমন্ত্রী।
বাংলাদেশ রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী সংস্থার কেন্দ্রীয় সভাপতি সাজিদ আকবরের সভাপতিত্বে উৎসবে আরও বক্তব্য দেন- রবীন্দ্র গবেষক ড.মকবুল হোসেন, শিল্পী লাকী দাশ ও সালমা আকবর।
অনুষ্ঠানে গান পরিবেশন করেন, শান্তা গুহ, অনিরুদ্ধ সেনগুপ্ত, শেলী মল্লিক, নুসরাত জাহান রুনা, সুমিত্রা বিশ্বাস, বহ্নিশিখা রক্ষিত, কান্তা দে ও শুভাগত চৌধুরী।