বাংলাদেশকে অর্থনীতির ঝুঁকির বিষয়ে সতর্ক করল আইএমএফ

বাংলাদেশের সামনে বেশ কিছু চ্যালেঞ্জ দেখতে পাচ্ছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল-আইএমএফ। এমনটি জানিয়ে বাংলাদেশ সফর শেষে আইএমএফ-এর মিশন প্রধান রাহুল আনন্দ রোববার এক বিবৃতিতে বলেছেন, মূল্যস্ফীতির চাপ, বিশ্ব অর্থনীতির অস্থিরতা এবং প্রধান বাণিজ্য অংশীদার দেশগুলোর অর্থনীতির ধীর গতি বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি, বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভ এবং টাকার মানের ওপর প্রভাব ফেলবে।

তিনি আরো বলেন, এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের একটি দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতি হিসেবে অবস্থান ধরে রাখতে পারলেও কিছু ঝুঁকি আছে। ঋণের অর্থ ব্যবহারের অগ্রগতি এবং অর্থনীতির বিভিন্ন সূচকের হালনাগাদ তথ্য জানতে গত ২৫ এপ্রিল বাংলাদেশে আসে আইএমএফ প্রতিনিধি দল। সংস্থার এশিয়া ও প্রশান্তমহাসাগরীয় অঞ্চলের প্রধান রাহুল আনন্দ প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন।

এই সফরে অর্থ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংক এবং জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন আইএমএফ প্রতিনিধিরা, বাংলাদেশের সামষ্টিক অর্থনীতির সর্বশেষ পরিস্থিতি এবং আইএমএফের ঋণে নেওয়া প্রকল্পগুলোর অগ্রগতি নিয়ে তারা আলোচনা করেন।

রাহুল আনন্দ বিবৃতিতে বলেন, এই সফরে আমরা সামষ্টিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি এবং আর্থিক খাতের অবস্থা নিয়ে আলোচনা করেছি। ঋণের অর্থে নেওয়া প্রকল্পগুলো এবং শর্ত পূরণের অগ্রগতির তথ্যও আমরা সংগ্রহ করেছি।

বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের চাপের মুখে অর্থনীতিতে স্থিতিশীলতা ফেরাতে আইএমএফ এর ঋণের আবেদন করে বাংলাদেশ। ঋণ চুক্তির সময় বাংলাদেশ বেশ কিছু ক্ষেত্রে সংস্কারের শর্তে সম্মতি দিয়েছিল।

৪ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলার ঋণের মধ্যে ফেব্রুয়ারিতে প্রথম কিস্তির ৪৭ কোটি ৬২ লাখ ডলার হাতে পায় বাংলাদেশ। এর আগে ও পরে বাংলাদেশ পরামর্শ অনুযায়ী বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম বাড়িয়ে ভর্তুকি কমানোসহ আর্থিক খাতের কাঠামো ও নীতি সংস্কারে বেশ কিছু পদক্ষেপ নেওয়া শুরু করে।

প্রথম কিস্তি পাওয়ার পর থেকেই পরামর্শ অনুযায়ী আর্থিক খাতের কাঠামো ও নীতি সংস্কারের বেশ কিছু শর্ত বাস্তবায়নও করেছে বাংলাদেশ। এখন অক্টোবর মাসে দ্বিতীয় কিস্তি ছাড়ের আগে অগ্রগতি মূল্যায়নের জন্য বাংলাদেশ সফর করে গেল আইএমএফ মিশন।

আইএমএফ জানিয়েছে, তাদের প্রতিনিধি দল বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার, অর্থ সচিব ফাতিমা ইয়াসমিন এবং সরকার ও বাংলাদেশ ব্যাংকের অন্যান্য জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা, বেসরকারি খাতের প্রতিনিধি, দাতা সংস্থা এবং উন্নয়ন সহযোগীদের সঙ্গেও বৈঠক করেছে।

বিবৃতির একেবারে শেষে আইএমএফ-এর মিশন প্রধান রাহুল আনন্দ বলেছেন, আন্তরিক আলোচনা এবং উষ্ণ আতিথেয়তার জন্য আমরা ধন্যবাদ জানাতে চাই। বাংলাদেশ এবং এর জনগণের সমর্থনে আমাদের সম্পৃক্ততা আমরা অব্যাহত রাখতে চাই।