আসছে ২ লাখ ৬৩ হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন বাজেট

আগামী ২০২৩-২৪ অর্থবছরের উন্নয়ন বাজেট বা বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) আকার ধরা হয়েছে ২ লাখ ৬৩ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে ৯৪ হাজার কোটি টাকা দেবে বিভিন্ন উন্নয়ন সহযোগীরা। আর বাকি ১ লাখ ৭৯ হাজার কোটি টাকা সরকারের রাজস্ব খাত থেকে ব্যয় করা হবে। আগামী অর্থবছরের এডিপির আকার চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের তুলনায় ১৭ হাজার কোটি টাকা বেশি। এ অর্থবছরে এডিপির আকার ছিল ২ লাখ ৪৬ হাজার ৬৬ কোটি টাকা।

পরিকল্পনা কমিশন সূত্রে জানা যায়, সুদ ও ভর্তুকিতে ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) বরাদ্দ বেশি বাড়ানো সম্ভব হচ্ছে না। চলতি বাজেটের তুলনায় এ খাতে বরাদ্দ মাত্র ৬ দশমিক ৮০ শতাংশ বাড়িয়ে আগামী বাজেটে ২ লাখ ৬৩ হাজার কোটি টাকা রাখা হচ্ছে। যেখানে আগের ২০২১-২২ অর্থবছরে এডিপির আকার ছিল ২ লাখ ২৫ হাজার কোটি টাকা। অর্থাৎ ২০২২-২৩ অর্থবছরে এডিপির আকার বেড়েছিল ২১ হাজার কোটি টাকা। আর এবার বাড়ছে ১৭ হাজার কোটি টাকা।

সূত্র জানায়, আগামী অর্থবছরের এডিপি বাস্তবায়নে ৯৪ হাজার কোটি টাকার বিদেশি ঋণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। চলতি অর্থবছরে যা রয়েছে ৯৩ হাজার কোটি টাকা। যদিও ২০২২-২৩ অর্থবছরের সংশোধিত এডিপির আকার কমিয়ে বৈদেশিক ঋণের পরিমাণ ধরা হয়েছে ৭৪ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে আশানুরূপ অগ্রগতি না হওয়ায় সংশোধিত বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে বরাদ্দ কমানো হয়েছে সাড়ে ১৮ হাজার কোটি টাকা। এর পুরোটাই বৈদেশিক অংশ থেকে কমানো হয়েছে। চলতি অর্থবছরের সংশোধিত এডিপির আকার ধরা হয়েছে ২ লাখ ২৭ হাজার কোটি টাকা।

উন্নয়ন বাজেটে বরাদ্দ বেশি থাকলেও তা খরচ করতে পারছে না মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলো। স্বাভাবিক সময়ে যেখানে জুলাই থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত আট মাসে ৩৭-৪০ শতাংশ পর্যন্ত এডিপি বাস্তবায়ন হয়, সেখানে চলতি অর্থবছরে এডিপি বাস্তবায়ন হয়েছে মাত্র ৩২ শতাংশ।

এ বিষয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান বলেন, উন্নয়ন কাজে  যদি বরাদ্দ না বাড়ে তা হলে তো উন্নয়ন হবে না। তাই বরাদ্দ বাড়ানো হয়েছে। বরাদ্দ কম থাকলে অর্থায়নের অভাবে কাজ এগোবে না। অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশগুলোও একই কাজ করে। আমরাও উন্নয়ন প্রকল্পের বাস্তবায়ন গতি বাড়ানোর জন্যই বরাদ্দ বাড়িয়েছি।

এদিকে আগামী অর্থবছরে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে ১৪ হাজার ৯৬৬ কোটি টাকা চায় রেলপথ মন্ত্রণালয়। এর মধ্যে সরকারের তহবিল থেকে চায় ৪ হাজার ৪২৩ কোটি টাকা। আর উন্নয়ন সহযোগী থেকে চায় ১০ হাজার ৪৪২ কোটি টাকা। চলমান ৩৫টি প্রকল্পের বিপরীতে এ অর্থ চেয়েছে তারা।

সেতু বিভাগ ৮ হাজার ৮৬৪ কোটি টাকা চাহিদা দিয়েছে। এর মধ্যে সরকারি তহবিল থেকে ৬ হাজার ১৯ কোটি টাকা এবং উন্নয়ন সহযোগীদের থেকে চেয়েছে ২ হাজার ৫৬৩ টাকা। আর নতুন অনুমোদিত ও অননুমোদিত প্রকল্পের জন্য চেয়েছে ২৮১ কোটি টাকা।

নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় এডিপিতে ৫ হাজার ৮২৩ কোটি টাকা বরাদ্দ চেয়েছে। এর মধ্যে সরকারের তহবিল থেকে ২ হাজার ৬৭৪ কোটি টাকা এবং প্রকল্প সাহায্য হিসেবে উন্নয়ন সহযোগীদের থেকে চেয়েছে ১ হাজার ৬৭৫ কোটি টাকা।

আগামী ২০২৩-২৪ অর্থবছরে সড়ক ও মহাসড়ক বিভাগ বরাদ্দ চেয়েছে ৩৩ হাজার ২৪০ কোটি টাকা। এর মধ্যে সরকারের তহবিল থেকে ২২ হাজার ৪৯৩ কোটি টাকা এবং প্রকল্প সাহায্য হিসেবে উন্নয়ন সহযোগীদের থেকে চেয়েছে ৯ হাজার ৭৪৭ কোটি টাকা এবং অননুমোদিত সম্ভাব্য প্রকল্পের জন্য সরকারের তহবিল থেকে ১ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ চেয়েছে তারা।