সরকারকে পদত্যাগ করে আলোচনায় বসতে হবে : মির্জা ফখরুল

 

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘সরকার যদি চায় সংঘাত এড়িয়ে সামনের দিকে যাবে, তাহলে এটা পুরোটাই সরকারের ওপর নির্ভর করে। প্রথমে বিরোধীদলের দাবিগুলো তাদের পূরণ করতে হবে। অর্থাৎ, পদত্যাগ করে আলোচনায় বসতে হবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের গণতান্ত্রিক অধিকারগুলোর পরিসরকে আবার সংকুচিত করছে সরকার। এভাবেই তারা জনগণকে দমন করে ক্ষমতায় টিকে থাকতে চায়।’

আজ শনিবার দুপুরে গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে সমমনা জোটের সঙ্গে বৈঠক শেষে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন ফখরুল।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকার নির্বাচিত হয়ে ক্ষমতায় আসেনি, জনগণের ভোটে ক্ষমতায় আসেনি। তারা রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে বেআইনিভাবে ব্যবহারের মাধ্যমে জোর করে ক্ষমতা দখল করে বসে আছে। ১৪ বছর ধরে তারা দেশের প্রতিষ্ঠানগুলোকে কবজা করে রেখেছে এবং একইসঙ্গে দেশের গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলো ধ্বংস করে দিয়েছে। অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে তাদের ক্ষমতাকে চিরস্থায়ী করতে তারা নির্বাচন ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দিয়েছে। দেশের অর্থনীতিকে ধ্বংস করেছে, লুটপাটের রাজনীতি করছে। সরকারি প্রশাসনের প্রতিষ্ঠানগুলোকে সম্পূর্ণভাবে দলীয়করণ করা হয়েছে। বিচার ব্যবস্থা দলীয়করণ করা হয়েছে। একইভাবে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে ধ্বংসের দিকে ফেলে দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশের গণতন্ত্রকামী মানুষ গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করছেন, লড়াই করছেন। প্রায় ৩৫ লাখ মানুষের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা রয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘আজ আমরা আলোচনা করেছি, আমাদের যুগপৎ আন্দোলনের ভবিষ্যৎ কর্মসূচি কী হতে পারে। বর্তমান যে রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট, তা নিয়ে আলোচনা করেছি। এই ঐক্য আরও কীভাবে দৃঢ় করা যায় এবং ভবিষ্যতে আন্দোলন আরও কীভাবে এগিয়ে নেওয়া যায়, তা নিয়ে আলোচনা করেছি।’

বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘আমাদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে পুলিশের হামলায় অনেকে আহত হয়েছেন। আজকের কর্মসূচিতে আমরা খবর পাচ্ছি পুলিশ বাধা প্রদান করছে, কর্মসূচি করতে দেবে না। আমাদের যে গণতান্ত্রিক অধিকারগুলো, সেগুলো তারা আবার সংকুচিত করছে। এভাবেই তারা জনগণকে দমন করে ক্ষমতায় টিকে থাকতে চায়। আমরা আন্দোলন শুরু করেছি, আন্দোলনকে আরও কীভাবে বেগবান করা যায়, সে বিষয়ে আলোচনা করেছি।’

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আপনারা তো অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণভাবে লক্ষ্য করেছেন, আমরা কিন্তু প্রথম থেকেই অত্যন্ত গণতান্ত্রিক উপায়ে নিয়মতান্ত্রিকভাবে শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের মধ্য দিয়ে আসছি। এ আন্দোলনের মধ্যে যারা যারা সম্পৃক্ত হচ্ছেন, এ আন্দোলন আরও চলবে, আগামী দিনে আরও বেগবান হবে। এ বিষয়গুলো নিয়ে আমরা কথা বলেছি।’

বৈঠকে জাতীয়তাবাদী সমমনা জোটের নেতাদের মধ্যে এনপিপি চেয়ারম্যান ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, জাগপা সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা খন্দকার লুৎফর রহমান, বিকল্পধারা বাংলাদেশের চেয়ারম্যান ড. নুরুল আমীন ব্যাপারী, গণদলের চেয়ারম্যান এ টি এম গোলাম মাওলা চৌধুরী, ডিএল-এর সাধারণ সম্পাদক সাইফুদ্দিন মনি, বাংলাদেশ ন্যাপ-এর চেয়ারম্যান এম এন শাওন সাদেকী, বাংলাদেশের সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক ডা. সৈয়দ নুরুল ইসলাম, বাংলাদেশ মাইনরিটি জনতা পার্টির সভাপতি সুকৃতি কুমার মণ্ডল, বাংলাদেশ মুসলিম লীগের সভাপতি ব্যারিস্টার নাসিম খান, বাংলাদেশ পিপলস লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট গরীব নেওয়াজ উপস্থিত ছিলেন।
বিএনপির পক্ষ থেকে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান ও সেলিমা রহমান উপস্থিত ছিলেন।