বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, ‘আমেরিকা ঘোষণা দিয়েছে যে যারা গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে বাধা দিবে আগামীতে তাদের ভিসা দেয়া হবে না। আর এ বাধাদানকারীরা হলো আওয়ামী লীগ।’
শনিবার (২৭ মে) নয়াপল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সামনে এক প্রতিবাদ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
উচ্চ আদালতের নির্দেশনাকে অধীনস্থ আদালত ও সরকারের অবজ্ঞা, গায়েবি মামলায় নির্বিচারে গ্রেফতার, মিথ্যা মামলা ও পুলিশি হয়রানী, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, বিদ্যুতের লোডশেডিং, আওয়ামী সরকারের সর্বগ্রাসী দুর্নীতির প্রতিবাদে এবং ১০ দফা দাবিতে ঢাকা মহানগর (উত্তর ও দক্ষিণ) বিএনপি এ প্রতিবাদ সভার আয়োজন করে।
খন্দকার মোশাররফ বলেন, ‘এই সরকার গায়ের জোরে ক্ষমতায় আছে। আমাদের নেতাকর্মীদের নামে মিথ্যা মামলা দিচ্ছে। আমাদের প্রতিটি কর্মসূচিতে আওয়ামী লীগের পেটুয়া বাহিনী বাধা দিচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘আজ সারা পৃথিবীই জেনেছে এ সরকারের অধীনে একটিও সুষ্ঠু নির্বাচন হয়নি। আওয়ামী লীগ ভালো করেই জানে, জনগণ দিনের বেলায় ভোট দিতে পারলে তাদের জামানত বাজেয়াপ্ত হবে।’
তিনি আরো বলেন, ‘শেখ হাসিনার অধীনে কোনো সুষ্ঠু নির্বাচন হওয়া সম্ভব নয়, আজ বিদেশীরাও তাই মনে করছে। তাই বিদেশীরাও দাবি তুলেছে সুষ্ঠু নির্বাচনের।’
‘মানুষের ভোটের অধিকার আওয়ামী লীগ হরণ করছে, এদেশের টাকা বিদেশে পাচার করে দেশের অর্থনীতিকে ধ্বংস করে দিয়েছে। এই অর্থনীতি আর মেরামত করা সম্ভব নয়। আজকে গরীব মানুষ না খেয়ে আছে, মধ্যবিত্ত গরিব হয়ে গেছে,’ বলেন তিনি।
বিএনপির সিনিয়র এই নেতা বলেন, ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া এদেশে শেখ হাসিনার অধীনে কোনো নির্বাচন হবে না। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে আন্দোলনরত কোনো দল এই সরকারের অধীনে নির্বাচন হতে দিবে না।’
তিনি আরো বলেন, ‘আমেরিকা ঘোষণা দিয়েছে, আগামীতে যারা গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে বাধা দিবে তাদের ভিসা দেয়া হবে না, আর এই বাধাদানকারীরা হলো আওয়ামী লীগ।’
তিনি বলেন, ‘এদেশে গণতন্ত্রকে উদ্ধার করতে হলে গণঅভ্যুত্থানের কোনো বিকল্প নেই। আমরা আশাবাদী, জনগণ প্রস্তুত, অচিরেই গণঅভ্যুত্থান শুরু হয়ে যাবে।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, ‘আজকের রাজপথে লাখ লাখ যুবক রাস্তায় নেমে এসেছে। এ যুবকদের পদভারে বানের জলে ভেসে যাবে শেখ হাসিনা সরকার। আমার এক পরিচিত সরকারি চাকরি করা লোককে অস্ট্রেলিয়ার ভিসা দিচ্ছে না, পরে জানতে পারলাম সেই লোক সরকারের অন্যায়ের সাথে জড়িত।’
তিনি বলেন, ‘আজ সারা পৃথিবী আপনাদের ভিসা দিচ্ছে না, পৃথিবীর কোনো সভ্য দেশ আপনাদেরকে ভিসা দিবে না। গত ১৪ বছরে আপনাদের সকল অপকর্মের বিচার হবে।’
যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নীতির ইঙ্গিত করে মির্জা আব্বাস বলেন, আপনারা (সরকার) মাইনকার চিপায় পড়ে গেছেন, আপনারদের আর বাঁচার সুযোগ নেই।’
তিনি দাবি করেন, ‘ঢাকা সেন্ট্রাল জেলে ধারণ ক্ষমতা ৪ হাজার ২০০, কেরানীগঞ্জে ১৬ হাজারের মতো, সারাদেশে ২ লাখ। সেগুলোতে শুধু আমারই কর্মী আছে কয়েক লাখ।’
সভাপতির বক্তব্যে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আবদুস সালাম বলেন, ‘এই সরকার সারা পৃথিবী থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে, দেশের আকাশ আজ অস্বাভাবিক পরিস্থিতি, ঝড় আসতেছে, এই সরকার উড়ে যাবে।’
ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সদস্য সচিব আমিনুল হকের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমান, বিএনপি নেতা মীর সরাফত আলী সপু, আজিজুল বারী হেলাল, মহিলা দলের সভানেত্রী মির্জা আফরোজা আব্বাস, যুবদলের সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু প্রমুখ।