আজ বিশ্ব পরিবেশ দিবস। জাতিসংঘ পরিবেশ কর্মসূচির ঘোষণা মোতাবেক ‘প্লাস্টিক দূষণ সমাধানে শামিল হই সকলে’ প্রতিপাদ্যে এবং ‘সবাই মিলে করি পণ, বন্ধ হবে প্লাস্টিক দূষণ’ স্লোগানে এবার বাংলাদেশে বিশ্ব পরিবেশ দিবস পালন করা হবে। আজ সকাল সাড়ে ৯টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবনে বৃক্ষরোপণের মাধ্যমে কর্মসূচির উদ্বোধন করবেন। শেরেবাংলা নগরে অনুষ্ঠেয় পরিবেশ মেলা চলবে ৫-১১ জুন পর্যন্ত। ২৭-৩০ জুন ঈদুল আজহার সরকারি ছুটি থাকায় বৃক্ষমেলা চলবে ৫-২৬ জুন এবং ১-১২ জুলাই পর্যন্ত। প্রতিদিন মেলা চলবে সকাল ৯টা থেকে সন্ধ্যা ৮টা পর্যন্ত।
‘বিশ্ব পরিবেশ দিবস ও পরিবেশ মেলা ২০২৩’ এবং ‘জাতীয় বৃক্ষরোপণ অভিযান ও বৃক্ষমেলা ২০২৩’ উপলক্ষে গতকাল সকালে বাংলাদেশ সচিবালয়ে তথ্য অধিদপ্তরের সভাকক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে এসব কথা জানান পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন।
পরিবেশমন্ত্রী জানান, বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আজ বেলা ১১টায় উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি থাকবেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধু অ্যাওয়ার্ড ফর ওয়াইল্ডলাইফ কনজারভেশন ২০২২, জাতীয় পরিবেশ পদক ২০২২, বৃক্ষরোপণে প্রধানমন্ত্রীর জাতীয় পুরস্কার ২০২১ এবং সামাজিক বনায়নের উপকারভোগীদের মধ্যে লভ্যাংশের চেক বিতরণ করা হবে।
শাহাব উদ্দিন বলেন, ‘বাংলাদেশ টেলিভিশন, বাংলাদেশ বেতারসহ অন্যান্য গণমাধ্যমে পরিবেশ দিবসের তাৎপর্যভিত্তিক অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করা হয়েছে। এ উপলক্ষে জাতীয় সংবাদপত্রে ক্রোড়পত্র এবং পরিবেশ অধিদপ্তর হতে স্মরণিকা ও বুকলেট প্রকাশ করা হবে। দেশের সব জেলা ও উপজেলায় এবং ঢাকা মহানগরীর ১০০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বিশ্ব পরিবেশ দিবস উদযাপন করা হবে। পরিবেশ দিবস উপলক্ষে শিশু চিত্রাঙ্কন, বিতর্ক ও স্লোগান প্রতিযোগিতা, পরিবেশবিষয়ক সেমিনার এবং শিল্পপ্রতিষ্ঠানের উদ্যোক্তাদের জন্য সচেতনতামূলক সেমিনার আয়োজন করা হচ্ছে। জাতীয়, বিভাগ, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে বৃক্ষমেলার আয়োজন করা হবে। এ উপলক্ষে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বৃক্ষের চারা বিতরণ করা হবে।’
মন্ত্রী বলেন, ‘প্লাস্টিক দূষণ রোধে ১০ বছর মেয়াদি কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন করা হয়েছে। সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিক বন্ধে তিন বছর মেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। নিষিদ্ধ পলিথিন শপিং ব্যাগের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের অংশ হিসেবে ২০১৯ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২৩ সালের এপ্রিল পর্যন্ত ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ৩ হাজার ৬৯২টি মামলা দায়ের, ৫ কোটি ৪৭ লাখ টাকা জরিমানা আদায়, ১ হাজার ৭৬৩ টন পলিথিন জব্দ এবং ১৬৯ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড প্রদান করা হয়েছে। এছাড়া সুন্দরবনসহ অন্যান্য বনভূমিতে যাতে সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিক দিয়ে কোনো দূষণ না হয় সে বিষয়ে কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।’
তিনি জানান, পরিবেশ সংরক্ষণ কার্যক্রমের অংশ হিসেবে দেশে ব্যাপক হারে বৃক্ষরোপণ করা হচ্ছে। ২০৩০ সাল নাগাদ দেশের বৃক্ষাচ্ছাদন মোট ভূমির ২২ দশমিক ৩৭ শতাংশ থেকে ২৫ শতাংশে এবং বনভূমির পরিমাণ ১৪ দশমিক ১ শতাংশ থেকে ১৬ শতাংশে উন্নীত করার লক্ষ্য নির্ধারণ হয়েছে। এ লক্ষ্যে সরকার বনায়ন ও বন সংরক্ষণ, অবক্ষয়িত বন পুনরুদ্ধার এবং টেকসই বন ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে।