পাকিস্তানকে নিয়ে কঠোর আইএমএফ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : পাকিস্তানের জন্য সম্প্রতি বেইলআউট প্যাকেজ ঘোষণা করেছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)। দীর্ঘ আলোচনার পর অবশেষে স্বস্তির খবর পেয়েছে ইসলামাবাদ। তবে বেইলআউট প্যাকেজের পাশাপাশি পাকিস্তানের দুর্বল অতীত রেকর্ড সম্পর্কে উদ্বেগ প্রকাশ করে এ বিষয়ে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে সংস্থাটি।

পাকিস্তান ভিত্তিক দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউন জানিয়েছে, পাকিস্তানকে আস্থার ঘাটতি কমাতে নতুন পদক্ষেপ নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছে আইএমএফ। সূত্রের বরাত দিয়ে খবরে বলা হয়েছে, বোর্ডের পক্ষে আইএমএফের নির্বাহী পরিচালক বাহাদর বিজানি বৃহস্পতিবার ভার্চুয়াল যোগাযোগের মাধ্যমে পাকিস্তানের অর্থমন্ত্রী ইসহাক দারকে বার্তাটি পৌঁছে দিয়েছেন।

পাকিস্তানের জন্য ৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের স্ট্যান্ড-বাই অ্যারেঞ্জমেন্ট (এসবিএ) প্রোগ্রাম অনুমোদন করার একদিন পর এমন উদ্বেগ প্রকাশ করে আইএমএফ। বাহাদর বিজানি আইএমএফ বোর্ডের ২৪ জন নির্বাহী পরিচালকের একজন। সূত্র অনুসারে, আইএমএফ বোর্ড বিজানিকে পাকিস্তানকে কঠোর বার্তা দিতে বলেছিল।

বোর্ড মিটিং চলাকালীন আইএমএফ পরিচালকরা সংস্কার বাস্তবায়নে এবং প্রতিশ্রুতি পূরণে পাকিস্তানের দুর্বল ট্র্যাক রেকর্ডের বিষয়ে গুরুতর উদ্বেগ প্রকাশ করেন। সূত্রের মতে, বিজানি আইএমএফ বোর্ডের উদ্বেগ দারকে জানিয়েছিলেন যাতে ঋণ পাওয়ার পর পাকিস্তানে কোনও আত্মতুষ্টি না হয়।

শুক্রবার পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ আইএমএফের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভার সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেন। এসময় তিনি তাকে তাকে আশ্বস্ত করেছেন যে, আস্থার ঘাটতি পূরণে ইসলামাবাদ প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে প্রকাশিত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, জর্জিয়েভা বলেছেন যে- অতীতের আস্থার ঘাটতির কারণে চুক্তির শর্ত পূরণের বিষয়ে পাকিস্তানকে নিয়ে সন্দিহান ছিল আইএমএফ। তবে তিনি বোর্ডকে আশ্বস্ত করেছেন যে, পাকিস্তান তার প্রতিশ্রুতি পূরণ করবে।

দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আইএমএফ বোর্ড পাকিস্তানকে জানিয়েছে যে- দুর্বল অবস্থার উন্নতি করার এটাই শেষ সুযোগ। আইএমএফ বোর্ড পাকিস্তানকে নতুন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করতে বলেছে এবং কড়া হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছে যে, এ বিষয়ে আর ছাড় দেওয়া হবে না।

আইএমএফ বোর্ড পাকিস্তানকে চলমান কর্মসূচি শেষ করার পরামর্শ দিয়েছে যাতে উভয় পক্ষের মধ্যে আস্থার ঘাটতি দূর হয়। আইএমএফের কৌশলগত যোগাযোগের পরিচালক জুলি কোজ্যাক বলেছেন যে, নয় মাসের স্ট্যান্ড-বাই অ্যারেঞ্জমেন্ট (এসবিএ) এর সঠিক বাস্তবায়ন পাকিস্তানের ভবিষ্যতের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

এক বিবৃতিতে জুলি কোজ্যাক বলেন, এটির বৃহৎ অর্থায়নের চাহিদা মোকাবেলার এবং সবচেয়ে দুর্বলদের সমর্থন করার জন্য সঠিক বাস্তবায়ন গুরুত্বপূর্ণ।

তিনি বলেন, পাকিস্তানের উচিত প্রবৃদ্ধির সম্ভাবনা জোরদার করতে অর্থনৈতিক সংস্কার করা এবং নতুন করে বেসরকারি পুঁজি প্রবাহের অনুকূল পরিবেশ তৈরি করা।

অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে যদিও পাকিস্তান আইএমএফের ঋণের প্রথম ধাপের ছাড় পেয়েছে। কিন্তু আগামী ৯ মাসে এটির সঠিক বাস্তবায়ন না হলে পরবর্তীতে তাদের তীব্র সমস্যার মুখে পড়তে হতে পারে। এটি আরও কঠিন করে তুলবে একটি বিষয়, তা হলো- আগামী নয় মাসে পাকিস্তান অন্তত তিনটি সরকারের অধীনে থাকবে। বর্তমান সরকারের মেয়াদ শেষ হচ্ছে, এরপর দায়িত্ব নেবে তত্ত্বাবধায়ক সরকার। এরপর নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন সরকার গঠিত হবে। এটি ইসলামাবাদের জন্য চ্যালেঞ্জিং প্রমাণিত হতে পারে।