চট্টগ্রাম : চট্টগ্রামের বহুল কাক্সিক্ষত এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে চলতি বছরের নভেম্বরে চালু হচ্ছে। ৪ হাজার ২৯৮ কোটি টাকা ব্যয়ে বাস্তবায়িত হওয়া এই মেগাপ্রকল্প চালু হলে চট্টগ্রামের নাগরিকরা যাতায়াতে চরম ভোগান্তি থেকে মুক্তি পাবেন। ১৬ কিলোমিটারের এই ফ্লাইওভার খুলে দিলে মাত্র ২৫-৩০ মিনিটে চট্টগ্রামের প্রাণকেন্দ্র জিইসি মোড় থেকে চট্টগ্রাম বিমানবন্দর, সমুদ্রসৈকত, কর্ণফুলী টানেল, সিইপিজেড, কর্ণফুলী ইপিজেড পৌঁছানো যাবে। ফলে যাত্রীদের অন্তত ২ ঘণ্টা সময় সাশ্রয় হবে। পর্যটন, ব্যবসা বাণিজ্য ও স্থানীয় যোগাযোগে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আসবে।
চট্টগ্রামের ব্যবসায়ী সমাজ ও সংশ্লিষ্টদের ভাষ্য, পরিকল্পিতভাবে এই প্রকল্পের সুফল আদায় করতে পারলে চট্টগ্রাম বন্দর-কাস্টমস কেন্দ্রিক যোগাযোগ সহজ হবে। বিমানবন্দর যাতায়াত সহজ হওয়া ছাড়াও কর্ণফুলী টানেলের সঙ্গে দক্ষিণ চট্টগ্রাম, বান্দরবান ও কক্সবাজারগামী যানবাহন চলাচলেও গতি আসবে। এই ফ্লাইওভার ধরে কর্ণফুলী টানেল হয়ে এসব রুটে সহজে যাতায়াত করা যাবে। এতে দীর্ঘ দূরত্বের পথে তিন ঘণ্টার বেশি সময় সাশ্রয় হবে।
সিডিএ চেয়ারম্যান জহিরুল আলম দোভাষ গণমাধ্যমকে দেয়া এক বক্তব্যে বলেন, ‘উন্নত বিশ্বের শহরগুলোর প্রধান বৈশিষ্ট্য বিমানবন্দরের সঙ্গে শহরের সহজ যোগাযোগ। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হওয়ার পর চট্টগ্রাম সেই বৈশিষ্ট্য অর্জন করবে। প্রকল্পের পতেঙ্গা অংশটি টানেলের সংযোগ সড়কে মিলিত হয়েছে। এর ফলে বন্দর নগরীর যোগাযোগে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনবে এই প্রকল্প। নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এক্সপ্রেসওয়ের মূল অংশ উদ্বোধন করবেন। এরপর যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হবে।’
সিডিএর প্রধান প্রকৌশলী কাজী হাসান বিন শামস জানান, এরই মধ্যে প্রকল্পের বেশিরভাগ কাজ শেষ হয়েছে। বর্তমানে সড়কের কার্পেটিংয়ের কাজ চলছে। যেভাবে কাজ চলছে আগামী অক্টোবরের মধ্যে এক্সপ্রেসওয়েটি গাড়ি চলাচল উপযোগী হবে। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে চট্টগ্রাম আরও নান্দনিক হয়ে উঠবে। বিমানবন্দর, সিইপিজেড, কর্ণফুলী ইপিজেড, বঙ্গবন্ধু টানেলসহ দক্ষিণ চট্টগ্রামের সঙ্গে সহজ সংযোগ তৈরি হবে।’
প্রসঙ্গত, চট্টগ্রামের মূল শহর থেকে পতেঙ্গায় অবস্থিত শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, পতেঙ্গা সমুদ্রসৈকত, কর্ণফুলী টানেলসহ শহরের উপকূলবর্তী অঞ্চলগুলোতে যেতে নগরীর লালখান বাজার, টাইগারপাস, দেওয়ানহাট, চৌমুহুনি, আগ্রাবাদ, বারেকবিল্ডিং, কাস্টমস মোড়, ইপিজেড মোড়, সল্টগোলা ক্রসিং পার হতে হয়। এসব পয়েন্টে যানজট নিত্যদিনের ব্যাপার। যানজটে পড়ে অনেক বিমানযাত্রী ফ্লাইট ধরতে না পারার মতো ঘটনাও ঘটে। সিডিএ সূত্র জানায়, নাগরিকদের যানজটের ভোগান্তি থেকে মুক্তি দেওয়া, বিমানযাত্রীদের যাতায়াত সহজ করা, পর্যটন খাতকে বিকাশিত হওয়ার সুযোগ করে দেওয়াসহ বেশ কিছু উদ্দেশ্য নিয়ে সিডিএ লালখান বাজার থেকে পতেঙ্গা পর্যন্ত এই এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণের উদ্যোগ নেয়।