গত বৃহস্পতিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) ঢাকার ঐতিহ্যবাহী নারিন্দা মশুরীখোলা দরবার শরীফের প্রতিষ্ঠাতা হযরত ক্বেবলা শাহ আহসানুল্লাহ (র.)’র ১৫৪তম পবিত্র ওরস মোবারক; গদ্দিনিশীন পীর সাহেব আলহাজ্ব মাওলানা শাহ্ মুহাম্মাদ আহসানুজ্জামান (মা.জি.আ.)’র সভাপতিত্বে মশুরীখোলা দরবার প্রাঙ্গণে মশুরীখোলা আন্জুমানে আহসানিয়া বাংলাদেশের সার্বিক ব্যবস্থাপনায় অনুষ্ঠিত হয়েছে।
জাকেরিনদের জিকির আযকার তালিম প্রদান করেন শাহ্জাদা মাও. হাফেজ শাহ্ মুহাম্মদ সাইফুজ্জামান এরফান। এতে বক্তব্য রাখেন, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের পরিচালক ড. সৈয়দ শাহ্ এমরান, মুফতি আলাউদ্দীন জিহাদী, অধ্যক্ষ মুফতি কাজী আবু জাফর মো. হেলাল উদ্দিন, সহ-অধ্যাপক মাও. আবুল বাশার মাও. গোলামুর রহমান আশরফ শাহ্, পীর মাও. আহমদুল হুদা খান, মাও. মুফতি মঈন উদ্দিন হেলাল, মাও. তাওহীদুল ইসলাম, মাও. জিয়াউর রহমান আবু শাহ, মাওলানা গাজী ফরিদ উদ্দিন প্রমুখ।
উক্ত অনুষ্ঠানে দেশবরেণ্য ওলামায়ে কেরাম, প্রখ্যাত বুযুর্গ, বরেণ্য শিক্ষাবিদ, বুদ্ধিজীবি, সাহিত্যিক, কবি, সাংবাদিকগণ উপস্থিত ছিলেন। খতমে কুরআন, দরসে হাদিস, দরবার সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান সমূহের শিক্ষার্থীদের মাঝে ইসলামিক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও পুরুষ্কার বিতরণী অনুষ্ঠানের মধ্যদিয়ে ওরসের মাহফিল আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়ে সারারাত হক্কানি ওলামায়ে কেরাম ও পীর-মাশায়েখদের বয়ান, নসিহত, যিকির, তাহাজ্জুদ নামায, মিলাদ-ক্বিয়াম, তাবারুক বিতরণ এবং দেশ ও জাতির কল্যাণে দোয়া কামনায় মুনাজাত পরিচালনা করে অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়।
সভাপতির বক্তব্যে মশুরীখোলা দরবার শরীফের পীর সাহেব বলেন, শাহ্ সূফি আহসানুল্লাহ (র.) ছিলেন আধ্যাত্ম জগতের নব আকাশের দীপ্তমান একজন সূর্য সন্তান। বাংলা ও আসামের হাজারো মানুষ তাঁর সিনা-ব-সিনা জ্ঞান শিক্ষা নিয়ে সিরাতুল মুস্তাকিমে আশ্রিত হয়েছেন। ঢাকা বিশ^বিদ্যালয় সহ অসংখ্য দ্বীনি প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করার ক্ষেত্রে এ মহান গুণীজনের ভূমিকা ছিলেন অপরিসীম। বিশেষত ফরায়েজী আন্দোলনের অগ্রদূত মুহাম্মদ মুহসীন উদ্দীন দুদু মিয়ার বেজুম্মা দলের নির্মম অত্যাচার বন্ধ ও পুনরায় বাংলার জনপদে জুমা নামাজ প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে শাহ্ সূফি আহসানুল্লাহ (র.)’র অবদান ছিলো অনস্বীকার্য।
তিনি আরো বলেন এদেশের ৯২ শাতংশ মুসলমানের ধর্মীয় বিশ্বাস সংস্কৃতিকে উপেক্ষা কোনভাবেই মেনে নেয়া হবেনা। দেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির জন্য সরকারের প্রতি উদাত্ত আহবান আমাদের। ইসলামী শিক্ষা ব্যাবস্থা ইসলামী নিয়ম অনুযায়ী চলবে। দেশে ইসলাম প্রচার প্রসার হয়েছে হক্কানি তরীকতের পীর ওলিদের মাধ্যমে। সুতরাং বর্তমান চতুর্মূখী ফেতনা ও মুসলিমসমাজ দ্বীনের প্রতি উদাসীনতার পরিস্থিতিতে আউলিয়াগণের আদর্শ অনুসরন করাই ইহকালে শান্তি ও পরকালে মুক্তির একমাত্র উপায়।
লক্ষাধিক ভক্ত আশেকানদের উপস্থিতিতে তিনি সরকারের কাছে উদাত্ব আহবান জানিয়ে বলেন, মুসলমানদের পবিত্র আত্মশুদ্ধির মাস; পবিত্র রমজান মাসে দ্রব্য মূল্য ঊর্ধ্বগতি রোধ করে পণ্যসামগ্রীর দাম নির্ধারণ উচিত।