ব্যাংক খাতের মোট ঋণের বড় অংশই কেন্দ্রীভূত হয়ে আছে ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগে। গত ডিসেম্বর শেষে ব্যাংক খাতের মোট ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১৫ লাখ ৩৮ হাজার ৩৪৩ কোটি টাকা। আগের বছরের তুলনায় যা ১ লাখ ৫০ হাজার ৬৭৯ কোটি টাকা বা ১০ দশমিক ৮৬ শতাংশ বেশি। এর মধ্যে ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগ থেকেই দেওয়া হয়েছে প্রায় ৮৬ শতাংশ। বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে এসেছে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, ব্যাংক ঋণের বড় অংশই ঢাকা-চট্টগ্রামে কেন্দ্রীভূত হওয়ায় জাল-জালিয়াতির বেশির ভাগই ঘটেছে এসব এলাকায়। আবার বেশির ভাগ ব্যাংক শাখা বা ব্যবসাকেন্দ্র সমপ্রসারণ হচ্ছে এ দুই বিভাগকে কেন্দ্র করে। অন্যান্য বিভাগে ঋণ কার্যক্রম বাড়াতে বিভিন্ন সময়ে ব্যাংকগুলোকে নির্দেশনা দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। বর্তমানে বাংলাদেশ ব্যাংকের অর্থায়নে কীভাবে অন্যান্য বিভাগে বাড়ানো যায়, সে বিষয়ে একটি কর্মসূচি চলমান।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, শিল্পকারখানাসহ বিভিন্ন কারণে ঋণের পাশাপাশি আমানতের বড় অংশ আসছে ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগ থেকে। ২০২৩ সাল শেষে ব্যাংক খাতের মোট আমানতের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১৭ লাখ ৪৯ হাজার ১৩২ কোটি টাকা। এর মধ্যে ঢাকা বিভাগের ৬১ দশমিক ৩০ শতাংশ। দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা চট্টগ্রাম বিভাগের ছিল ২১ দশমিক শূন্য ৯ শতাংশ। এরপর রয়েছে পর্যায়ক্রমে খুলনা ৪ দশমিক ২০ শতাংশ, রাজশাহী ৩ দশমিক ৯৮ শতাংশ, সিলেট ৩ দশমিক ৯৮ শতাংশ, রংপুর ১ দশমিক ৯৪ শতাংশ, বরিশাল ১ দশমিক ৯০ শতাংশ এবং ময়মনসিংহ বিভাগের ১ দশমিক ৬০ শতাংশ।
এদিকে অনেক বছর ধরে মোট ঋণে রাষ্ট্রীয় মালিকানার ব্যাংকগুলোর অংশ কমে বাড়ছিল শরিয়াহভিত্তিক পরিচালিত ইসলামী ধারার ব্যাংকগুলোর। চলমান তারল্য সংকটের মধ্যে সে ধারায় পরিবর্তন এসেছে। ২০২৩ সালে মোট ঋণে রাষ্ট্রীয় ব্যাংকগুলোর অংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২১ শতাংশ। আগের বছর যা ২০ দশমিক ৪৬ শতাংশ ছিল। আর শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংকের অংশ ২০২২ সালে ২৬ দশমিক ৮৫ শতাংশ থেকে কমে ২৬ দশমিক ৩৫ শতাংশে নেমেছে।
বিশেষায়িত ব্যাংকে ২ দশমিক ৭৮ শতাংশ থেকে বেড়ে হয়েছে ২ দশমিক ৮২ শতাংশ। বিদেশি ব্যাংকের কমে ২ দশমিক ৬৫ শতাংশে নেমেছে। আগের বছর শেষে ছিল ২ দশমিক ৮২ শতাংশ। এ ছাড়া ইসলামী ব্যাংকগুলোসহ বেসরকারি ব্যাংকের অংশ ৭৩ দশমিক ৯৪ শতাংশ থেকে কমে গত বছর শেষে ৭৩ দশমিক ৫৩ শতাংশে নেমেছে।