চট্টগ্রাম ওয়াসায় প্রয়োজন দক্ষ ব্যবস্থাপক!

গত ৫ আগষ্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দালনের মুখে দেশের প্রেক্ষাপট পরিবর্তনের ফলে সারা দেশে বৈষম্যের শিকার ব্যক্তি বা প্রতিষ্টানের ব্যাপক পরিবর্তন লক্ষনীয়। তারই ধারাবাহিকতায় চট্টগ্রাম ওয়াসাও পরিবর্তনের মধ্যে পরে। বৈষম্যবিরোধী সাধারন নাগরিক সমাজের ব্যানারে চট্টগ্রাম ওয়াসা ভবনে ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পারচালক পরিবর্তনের আওয়াজ তুলে। তাদের বৈষম্যবিরোধী সাধারন নাগরিক সমাজের আন্দোলনের কারণে চট্টগ্রাম ওয়াসার দাপ্তরিক কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত ও কর্মপরিবেশ বিনষ্ট হয়েছে। চট্টগ্রাম মহানগরীর জনসাধারনের মধ্যে সুপেয় পানি সরবরাহের লক্ষ্যে দাপ্তরিক কার্যক্রম পরিচালনাসহ সুষ্ঠু কর্মপরিবেশ নিশ্চিতকল্পে চট্টগ্রাম ওয়াসা কর্তৃপক্ষ সংশ্লিষ্ট সকলের সহযোগিতা কামনা করে আহবানও জানান।

চট্টগ্রাম ওয়াসা বৈষম্যবিরোধী সাধারন নাগরিক সমাজের আন্দোলনের যৌক্তিকতাও রয়েছে। কথা হচ্ছে এত বড় নগরের সুপেয় পানি যথাযত ভাবে সাপ্লাইয়ে একটা ঝুকি ও রয়েছে। চট্টগ্রাম ওয়াসা একজন দক্ষ ব্যবস্থাপক খুবই জরুরী। স্থবির চট্টগ্রাম ওয়াসার এ কার্যক্রমের জন্য চট্টগ্রাম ওয়াসা বোর্ডের চেয়ারম্যান হিসেবে ২০০৯ সালে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পান একেএম ফজলুল্লাহ। সেখান থেকে ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) হিসেবে অষ্টমবারের মতো চুক্তিভিত্তিক দায়িত্ব পালন করছেন তিনি। অন্তর্র্বতীকালীন সরকার দায়িত্ব নেয়ার পর চুক্তিভিত্তিক নিয়োগকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশ করেছে। এর মধ্যে দেশে অনেক পদ থেকে সরিয়ে দেয়া হলেও চট্টগ্রাম ওয়াসার ব্যবস্থা পরিচালকের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। বৈষম্যবিরোধী সাধারন নাগরিক সমাজের আন্দোলন এটা নিয়েই।

ব্যবস্থাপনা পরিচালক তবে রুটিন ওয়ার্কের বাইরে তিনি কোনো কাজ করছেন না। অফিস খোলা থাকলেও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কাজে স্থবিরতা দেখা যায়। এতে অনেকটাই স্থবির হয়ে পড়েছে ওয়াসার কার্যক্রম।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দীর্ঘমেয়াদে এভাবে কাউকে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেয়া প্রতিষ্ঠানের জন্য ভালো নয়। এখন অন্তর্র্বতীকালীন সরকারের দিকে তাকিয়ে রয়েছেন ওয়াসার কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। তাদের অভিযোগ, চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পেয়ে গত ১৫ বছরে অনেক অনিয়ম করেছেন ব্যবস্থাপনা পরিচালক। এমন একটি পরিস্থিতিতে খুবই গুরুত্বপূর্ণ সুফেয় পানি সরবরাহে যাতে কোন ধরণের সমস্যা সৃষ্টি না হয় তা মাথায় রেখে একজন দক্ষ ও অভিঞ্জ ব্যক্তি হিসেবে প্রধান নির্বাহী প্রকৌশলী মাকসুদ আলমের প্রতি ইঙ্গিত পোষন করেন অনেকে। এর কারণ ও বর্ণনা দিতে গিয়ে চট্টগ্রাম ওয়াসার অভিজ্ঞ একজন সাবেক কর্মকর্তা বলেন, চট্টগ্রাম ওয়াসা বিশাল একটি প্রতিষ্টান, চট্টগ্রাম নগরের কোথায় কি আছে একজন অভিজ্ঞ ব্যক্তি যেভাবে খুব তাড়িতাড়ি বুঝতে পারবে। নতুন কেউ এ চেয়ারে বসলে অনেক সময়ের ব্যাপার হবে।

এ প্রসঙ্গে নগর পরিকল্পনাবিদেরও মতামত রয়েছে, ‘চট্টগ্রাম ওয়াসার চুক্তি ভিত্তিক নিয়োগের কারণে সংকট তৈরি হয়েছে, চুক্তি ভিত্তিক নিয়োগ পদে যোগ্যতার স্বাক্ষর রাখতে নাও পারেন। যোগ্যতা সম্পন্ন মানুষ হলে ১৫ বছর বা ২০ বছর থাকলেও কোনো সমস্যা হবে না। ওয়াসার এমডি তার মেয়াদে দূর্নীতি অনিয়ম স্বজনপ্রীতি করেছে তার জন্য কিছু ব্যক্তি আওয়াজ তোলেন। ওয়াসার মতো জায়গায় অভিজ্ঞ মাকসুদ আলমের মত অভিজ্ঞ ব্যক্তিদের নিয়োগ দিলে প্রকল্পের কাজগুলো আরো ভালোভাবে সমন্বয় করা সম্ভব হবে।’

একজন যোগ্য প্রশাসক ও ব্যবস্থাপকের মৌলিক গুণাবলির মধ্যে শ্রেষ্ঠ গুণ হচ্ছে নৈতিকতা। নৈতিকতা একটি ব্যাপক ধারণা, যা মানুষের বাহ্যিক আচরণের পাশাপাশি মানব চিন্তাকে ও নিয়ন্ত্রণ করে। আর দায়িত্বশীলতা, দক্ষতা, সরলতা, কর্বত্যপরায়ণতা, ন্যায়নিষ্ঠা প্রভৃতি নৈতিকতা থেকেই উদ্ভূত। কেমন ব্যবস্থাপক চাই চট্টগ্রাম ওয়াসা? এমন একটি প্রশ্নে চট্টগ্রাম ওয়াসার সাবেক একজন কর্মকর্তা বলেন,যে ব্যবস্থাপক সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন পক্ষের সাথে যতবেশি যোগাযোগ সম্পর্ক গড়ে তুলতে পারেন কার্যক্ষেত্রে তার পক্ষেই ততবেশি কার্যকর ভূমিকা রাখা সম্ভব হয়ে থাকে। তাই সকল অবস্থায় যোগাযোগ রক্ষার মাধ্যমে সঠিক তথ্য জানা ও জানানো এবং সহজে সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা করে লক্ষ্যার্জনের গুণ ব্যবস্থাপকের থাকা উচিত সে ক্ষেত্রে প্রধান প্রকৌশলী মাকসুদ আলম একজন পরিক্ষীত ব্যক্তি।

তিনি আর বলেন, একজন আদর্শ মানুষের অপরিহার্য গুণ হলো পরামর্শ গ্রহণ করা। ব্যক্তিগত, সামাজিক,রাষ্ট্রিয় ও আন্তর্জাতিক যে কোন মৌলিক গুরুত্বপূর্ণ ও জটিল কাজে পরিষদের কিংবা জ্ঞানী-গুণীদের পরামর্শ গ্রহণ করার মানসিকতা থাকাব। এটি আল্লাহর নির্দেশ। এমনকি রাসূল (সা.) এর ওপরও এই নির্দেশ ছিল। আল্লাহ তা’য়ালা বলেন, এবং কাজে-কর্মে তাদের সাথে পরামর্শ করুন। (সূরা তালাক : আয়াত ৩)