সাড়ে ৬৩ হাজার মেট্রিক টন কয়লা নিয়ে আরেকটি বড় জাহাজ মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্রবন্দরের কয়লা জেটিতে ভিড়েছে। আজ শনিবার বিকাল ৪ টা ২৭ মিনিটে কৃত্রিম চ্যানেল দিয়ে জাহাজটি জেটিতে আনা হয়।
চট্টগ্রাম বন্দরের অভিজ্ঞ পাইলটেজ টিম জাহাজটি জেটিতে নিয়ে আসে। এ কাজে সহায়তা করে চট্টগ্রাম বন্দরের কয়েকটি টাগ।
বন্দর সূত্রে জানা গেছে, এমভি ওউসু মারু নামক ইন্দোনেশিয়ার তারাহান বন্দর থেকে (দ্বিতীয় বার) আসা জাহাজে সাড়ে ৬৩ হাজার টন কয়লা রয়েছে। পানির নিচে জাহাজটির গভীরতা (ড্রাফট) সাড়ে ১২ মিটার। আগামীকাল থেকে জাহাজটির কয়লা খালাস শুরু হয়েছে।
এর আগে, ২৪ এপ্রিল ইন্দোনেশিয়া থেকে ৬৩ হাজার টন কয়লা নিয়ে পানামার পতাকাবাহী এমভি ‘অউসো মারো’ মাতারবাড়ি সমুদ্রবন্দরের বহির্নোঙরে আসে। পরদিন ২৫ এপ্রিল জাহাজটিকে মাতারবাড়ি কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্রের জেটিতে আনা হয়। বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় জাহাজ ছিল এটি। যা ২২৯ মিটার দীর্ঘ ও গভীরতায় ১২ দশমিক পাঁচ মিটার।
কয়লাবিদ্যুৎ কেন্দ্রটির জন্য প্রথম কয়লা নিয়ে আসে এমভি ‘অউসো মারো’। সফলভাবে কয়লা খালাস করে ৭ মে জাহাজটি মাতারবাড়ি জেটি ছেড়ে যায়।
সমুদ্র থেকে ১৪ দশমিক তিন কিলোমিটার দীর্ঘ ও ৩৫০ মিটার চওড়া কৃত্রিম চ্যানেলের মধ্য দিয়ে জাহাজগুলো জেটিতে আনা হচ্ছে। অউসো মারো ও ওয়ায়.এম এনডেভর এর আগে এ জেটিতে ১১২টি জাহাজ ভিড়লেও সেগুলোতে ছিল বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের উপকরণ। বিদ্যুৎ উৎপাদনের কাঁচামাল কয়লা নিয়ে এসেছে দুটি জাহাজ।
চট্টগ্রাম বন্দরের জেটিতে এখন সর্বোচ্চ ১০ মিটার ড্রাফট ও ২০০ মিটার লম্বা জাহাজ আনার সুযোগ আছে। পায়রাবন্দরেও চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে ভিড়েছে ১০ দশমিক ১০ মিটার ড্রাফটের জাহাজ। কিন্তু ‘অউসো মারো’র মতো দীর্ঘ ও ড্রাফটের জাহাজ মাতারবাড়িতে প্রথম দুই বার আসল।
কোল পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি বাংলাদেশ লিমিটেডের (সিপিজিসিবিএল) অধীনে জাপানের তিনটি প্রতিষ্ঠানের একটি কনসোর্টিয়াম বিদ্যুৎকেন্দ্রটি নির্মাণ করছে। এ প্রকল্পের আওতায় ৬০০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন দুটি স্টিম টারবাইন, সার্কুলেটিং কুলিং ওয়াটার স্টেশন স্থাপন, ২৭৫ মিটার উচ্চতার চিমনি ও পানি শোধন ব্যবস্থা স্থাপন করা হবে।
চট্টগ্রাম বন্দরের এক কর্মকর্তা জানান, বাংলাদেশের মেরিটাইম সেক্টরের নতুন মাইলফলক ছুঁয়েছে মাতারবাড়ি। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির নতুন দিগন্ত খুলে দিয়েছে এটি। এখানে এখন পর্যন্ত তিনটি বড় জাহাজ ভিড়েছে। এ সাফল্য মেরিটাইম ওয়ার্ল্ডে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করেছে। এখন একের পর এক জাহাজ আসবে কয়লা নিয়ে।
মাতারবাড়িতে সমুদ্রবন্দর প্রকল্পের আওতায় ৩০০ মিটার দীর্ঘ একটি মাল্টিপারপাস জেটি এবং ৪৬০ মিটার দীর্ঘ একটি কনটেইনার জেটি নির্মিত হবে।