ছোটপর্দার অভিনেত্রী হুমায়রা হিমুর মৃত্যুর পর থেকেই পলাতক ছিলেন তার কথিত প্রেমিক উরফি জিয়া ওরফে জিয়াউদ্দিন রুফি। শুক্রবার সকালে তাকে উত্তরার একটি বাসা থেকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।
শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে র্যাবের লিগ্যাল ও মিডিয়া উইং থেকে গণমাধ্যমে পাঠানো এক ক্ষুদেবার্তায় বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে। এ বিষয়ে বিকালে সংবাদ সম্মেলন করে বিস্তারিত জানানো হবে বলে জানিয়েছে র্যাব।
বৃহস্পতিবার বিকালে রহস্যজনক মৃত্যু হয় অভিনেত্রী হুমায়রা হিমুর। এদিন বিকালে তাকে মুমূর্ষ অবস্থায় রাজধানীর উত্তরার বাংলাদেশ হাসপাতালে নিয়ে যান তার প্রেমিক জিয়া ও মেকাপম্যান মিহির। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক হিমুকে মৃত ঘোষণা করেন। এর পরই লাপাত্তা হয়ে যান অভিনেত্রীর ওই কথিত প্রেমিক। অবশেষে ধরা পড়লেন র্যাবের জালে।
সূত্র থেকে জানা নযায়, বিগো অ্যাপস নামে একটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সাইটের মাধ্যমে জিয়ার সঙ্গে পরিচয় হয় হিমুর। সেখানে কথা বলতে বলতে বন্ধুত্ব, এক পর্যায়ে প্রেমের সম্পর্ক।
অভিনেত্রীর কাছের কয়েকজন সহকর্মীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, পরিচয় গোপন করে ছদ্মনামে হিমুর সঙ্গে পরিচিত হয়েছিলেন উরফি জিয়া। তিনি মাদকাসক্ত ছিলেন। নিয়মিত মাদক গ্রহণ করতেন।
ওই সহকর্মীরা এও জানিয়েছেন, হিমুকে নাকি বিয়ে করতে চেয়েছিলেন তার কথিত প্রেমিক উরফি জিয়া। তবে গত কয়েকদিন ধরে তাদের মধ্যে দ্বন্দ্ব চলছিল। তারই জেরে হিমু গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ঘটনার বর্ণনা দিয়ে হিমুর সহকর্মীরা জানান, বৃহস্পতিবার বিকাল তিনটার দিকে হিমুর বাসায় যান তার প্রেমিক উরফি জিয়া। এরপর তাদের মধ্যে কোনো একটি বিষয় নিয়ে তুমুল তর্কাতর্কি হয়। বাসা থেকে বেরিয়ে যান জিয়া।
জানা যায়, এর পরপরই গলায় ফাঁস দেন হিমু। এই খবর ফোনে জিয়াকে জানান মেকাপম্যান মিহির। কিছুক্ষণ পর তারা দুজন মিলে হিমুকে নিয়ে যান রাজধানীর বাংলাদেশ হাসপাতালে। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি।
হাসপাতালে যখনই চিকিৎসক হিমুকে মৃত ঘোষণা করে থানায় ফোন দেন, তখনই হিমুর ব্যবহৃত মোবাইল ফোন নিয়ে উধাও হয়ে যান অভিনেত্রীর কথিত প্রেমিক জিয়া।
এদিকে, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় পুলিশের হাতে আটক হন মেকাপম্যান মিহির। বিভিন্ন সূত্রে জানতে পেরেছে, এই মেকাপম্যান নাকি হিমুর পালিত ভাই ছিলেন। হিমুর সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে থাকছিলেন একই বাসায়।
আরও জানা গেছে, ওই মেকাপম্যান নাকি নিয়মিত ইয়াবা ট্যাবলেট সেবন করতেন! শুধু তাই নয়, বিভিন্ন জায়গায় মাদক সরবরাহও করতেন। তবে মিহির সঙ্গে হিমুও একই কাজ করতেন কি না, তা জানা যায়নি।