ঘটনাটি ঘটেছে টাঙ্গাইলের গোপালপুর উপজেলার হেমনগর ইউনিয়নের নলিন তালুকদার পাড়া গ্রামে। এ ঘটনায় গত শুক্রবার রাতে মীমের বাবা গোলাম কিবরিয়া তালুকদার রিপন মা ও খালাকে আসামি করে গোপালপুর থানায় মামলা করেন। ওই মামলায় মা সালমাকে গ্রেপ্তার করে জেলহাজতে পাঠিয়েছে পুলিশ।
মামলায় আসামিরা হলেন- ভূঞাপুর উপজেলার অর্জুনা গ্রামের শাহজাহান আলীর দুই মেয়ে সালমা বেগম ও শারমিন।
জানা যায়, চাকরির সুবাদে মীমের বাবা টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে থাকেন। সদ্য এসএসসি পরীক্ষা শেষ করা মেয়েকে নিয়ে মা সালমা বেগম গ্রামের বাড়ি হেমনগর ইউনিয়নের নলিন তালুকদার পাড়ায় বসবাস করেন।
বাবা বাড়িতে না থাকায় মাঝে মধ্যেই সালমা বেগম মেয়েকে শারীরিক ও মানুষিক অত্যাচার-নির্যাতন করতেন।
বিষয়টি নিয়ে মানবজমিনের সাথে কথা হলে নিহতের বাবা গোলাম কিবরিয়া জানান, প্রায়ই মা-মেয়ের ঝগড়া হতো। গত বৃহস্পতিবার ঝগড়ার পর বিকেলে মীমের মা তার বাবার বাড়ি ভূঞাপুর উপজেলার অর্জুনা গ্রামে যান। পরে খালা শারমিনসহ অজ্ঞাতনামা ২-৩ জনকে নিয়ে রাতে বাড়ি ফিরেন তিনি। পরে রাত সাড়ে ১২টার দিকে মা সালমা বেগম ও খালা শারমিনসহ অজ্ঞাত আরো কয়েকজন মিলে মীমকে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন। ঘটনার পরপর রাত সাড়ে ১২টার দিকে শ্যালিকা শারমিন তার মোবাইলে কল দিয়ে জানান, মীম অসুস্থ। তাকে ভূঞাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। পরে জানতে পারি হাসপাতালে নেওয়ার পর আমার মেয়েকে মৃত ঘোষণা করেছেন চিকিৎসক। কিন্তু তিনি কর্মস্থল থেকে ফিরে এসে মীমের লাশ বাড়ির পাশে এক বাগানে দেখতে পান। পরে তার মনে সন্দেহ হলে জানতে পারেন, পারিবারিক কলহের জেরে তার স্ত্রী সালমা বেগম ও শ্যালিকা শারমিন অজ্ঞাতনামা কয়েকজন মিলে মীমকে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছেন। মৃত্যুর বিষয়টি অন্য দিকে প্রভাবিত করার জন্য কৌশলে মেয়ের মরদেহ হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। কিন্তু তখনো মীমের নাক-মুখ দিয়ে রক্ত ও ফেনা ঝরছিল। গলায় ছিল কালচে দাগ। এ ঘটনায় স্ত্রী ও শ্যালিকাকে আসামি করে মামলা করেছেন তিনি।
এ ব্যপারে গোপালপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোশারফ হোসেন জানান, নিহতের বাবার দায়ের করা মামলায় মা সালমা বেগমকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। তদন্ত চলছে। এ ঘটনার মূল রহস্য দ্রুতই উদঘাটন হবে বলে তিনি জানান।