এম হাশেম তালুকদার
কে বক্স সাহেব দীর্ঘ চাকরি নিয়ে চট্টগ্রাম শহরে বসবাস করেন পরিবার পরিজন নিয়ে। অবসর সময়ে নিজে কিছু করার চিন্তা করে শুরু করেন ব্যবসা। সৌভাগ্যক্রমে ব্যবসার সম্প্রসারণ হয়েছে অনেক দূর। কাজের সুবাধে সিলেট, খুলনা, ঢাকা প্রায়ই যাতায়াত করা লাগে তার। তবে এই মাসে নতুন দিগন্ত উঁকিঝুঁকি মারছে কাজের আড়াল দিয়ে। সুদূর কাতারে সন্ধান পেয়েছেন নতুন সম্ভাবনার। দেশের বিভিন্ন বিভাগের মাঝে প্রতি মাসে কয়েকবার যাতায়াত করা হলেও, কাজের জন্য বিদেশ যাওয়ার সুযোগ কে বক্স সাহেবের এই প্রথম।
কাতার যাওয়ার পরিকল্পনা নিয়ে যতটা উত্তেজনা, তার চেয়ে বেশি দুশ্চিন্তায় কে বক্স সাহেব— কিভাবে যাবেন? আর কোথায় বা থাকবেন? সেই ২০২২ সালে একবার পরিবার নিয়ে মালয়েশিয়া যাওয়ার চিন্তা করেছেন। অবশেষে মালয়েশিয়া গেলেন। কিন্তু যাওয়ার পর বুঝতে পারেন ফ্লাইট আর হোটেল দু’টার জন্যই ন্যায্যমূল্যের চেয়ে অনেক বেশি খরচ করেছেন তারা। তাছাড়া হোটেলে সুইমিং পুল, শহরের দৃশ্য ইত্যাদির আশ্বাস নিয়ে বুকিং দিয়েছিলেন এক পরিচিত লোকের মাধ্যমে। কিন্তু যাওয়ার পর দেখতে পারেন এগুলোর কিছুই নেই। এরপর থেকে স্বভাবতই বিদেশ ঘুরা নিয়ে কিছুটা অবিশ্বাস কাজ করা শুরু করেছে তার মধ্যে।
পূর্বপরিচিত কিছু মাধ্যমে খোঁজ নিয়ে বিভিন্ন রকমের ফ্লাইটের ব্যাপারে শুনতে পান। কিন্তু ফ্লাইটের নানা বিষয়ে আলাদাভাবে খোঁজ নিতে নিতে কে বক্স সাহেব বিরক্ত। লে ওভার কোথায় এবং কতক্ষণ, লাগেজের সীমা কত কেজি ইত্যাদি তথ্য পেতে সারাদিন সময় লেগে যাচ্ছে তার। আবার নামের মাঝেও কোন সামঞ্জ্যস্যতা খুঁজে পাচ্ছেন না। হোটেল বুকিং এর ব্যাপারটা আরও বিভ্রান্তিকর। ইন্টারনেটের যুগে তিনি নিজেও কিছু ঘাটাঘাটি করে রেখেছেন। কিন্তু যেই হোটেলগুলো অনলাইনে পছন্দ হয় সেগুলো কোনটাই তাই পরিচিত মানুষের কাছে পান না।
বিরক্তির চূড়ান্তে এসে প্রায় সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেন বিশে যাওয়াই বা ওেয়ার। এমন সময়ই কে বক্স সাহেবের ছেলে লিটন জানতে পারে বাবার বিভ্রান্তির কথা। ছেলে বাবার গল্প শুনে হেসে দেয়। ‘দাড়াও, তোমার সব সমস্যার সমাধান আমার ফোনের মধ্যেই আছে।’— বলল লিটন। কে বক্স সাহেব ভাবলেন নতুন কোন এজেন্টের নম্বর হয়তো। কিন্তু তাকে অবাক করে গিয়ে লিটন ফোনে একটা অ্যাপ চালু করলো। অ্যাপটির নাম গোযায়ান। কে বক্স সাহেব অবাক হয়ে দেখেন যে, সেখানে ফ্লাইট, হোটেল, ট্যুর সব এক জায়গায়ই বুক করার ব্যবস্থা আছে।
লিটন বাবাকে বললো, কিভাবে চট্টগ্রাম থেকে যেকোন গন্তব্যে পছন্দ মতো তারিখে ফ্লাইট সিলেক্ট করা যায়। কে বক্স সাহেব বিস্ময়ের সাথে দেখলেন, যেই কাজের জন্য তিনি ২-৩ দিন ধরে দৌড়াদৌড়ি করে অধৈর্য হয়ে গিয়েছেন, সেই কাজ মুহূর্তের মধ্যে হয়ে গেল ফোনের স্ক্রিনে। হোটেল অপশনে গিয়ে তিনি আরও খুশি। যেই হোটেলগুলো এতদিন শুধু ছবি দেখে পছন্দ করেছেন কিন্তু বুক করতে পারেননি, সেগুলোই এখানে আছে। শুধু তাই না, সুইমিং পুল, জিম, বিজনেস সেন্টার ইত্যাদি সব ধরনের চাহিদা সার্চ বাটনে ক্লিক করা আগেই সিলেক্ট করা যায়। সাথে আছে রুমের সাম্প্রতিক ছবি, যাতে পর্যটকরা কোনভাবেই প্রতারিত না হন।
‘এটা নতুন কোন বিশেী ওয়েবসাইট নাকি?’— জিজ্ঞাসা করলেন কে বক্স সাহেব। লিটন তাকে জানালো এটা সম্পূর্ণ বাংলােেশ তৈরি একটি অ্যাপ। তাই বিকাশ, নগদ, উপায় ইত্যাদি এবং সব ধরনের দেশি ব্যাঙ্কের কার্ড ব্যবহার করে পেমেন্ট করা যায়। কে বক্স সাহেব প্রমবারের মত নিজেই নিজের পছন্দমত ফ্লাইট আর হোটেল ঠিক করলেন। মনের মাঝে কিছুটা ভয় আর অনিশ্চয়তা নিয়েই পেমেন্ট নিশ্চিত করলেন। কিন্তু পেমেন্ট করার সাে সাথে গোযায়ান থেকে পেয়ে গেলেন ই-মেইল। সেখানে তার বুকিং এর নিশ্চয়তাসহ ফ্লাইট সম্পর্কিত সব ধরনের বাড়তি আলাদাভাবে দেওয়া ছিল, এখন শুধুমাত্র উড়াল দেওয়ার অপেক্ষা।
কাতার থেকে আসার পর থেকে কে বক্স সাহেবের মেজাজ বেশ ফুরফুরে। প্রায়ই এখানে সেখানে ঘুরতে যাওয়ার পরিকল্পনা করেন পরিবারবর্গের সাথে। নিজে নিজে বুকিং করতে তার বেশ আনন্দই লাগে। ‘গোযায়ান ব্যবহারের পর আমি বুঝেছি, ভ্রমণ নিয়ে অযথা দুশ্চিন্তার কোন কারণই নেই। নতুন করে চিনতে পেরেছি অনেক ভ্রমণের জায়গাও। ছকে বাধা কয়েকটি অ্যাক্টিভিটির বাইরে আগে কিছুই করা হতো না। কিন্তু গোযায়ান ভ্রমণ নিয়ে আমার ধারণা বলে দিয়েছে’— জানান কে বক্স সাহেব।
বক্স সাহেব বর্তমানে কাশ্মীরে কয়েকদিন ঘুরে আসার পরিকল্পনা করছেন। নিজের ভ্রমণের নিয়ন্ত্রণ নিজের হাতে নিতে পারলে, বেশ ভালোই লাগে। সুখবর হলো, গোযায়ান-এর সেবা আপনারাও নিতে পারেন। এখনই এই লিঙ্কে ক্লিক করে ডাউনলোড করে নিতে পারেন তাদের অ্যাপ। ভ্রমণ চলুক সীমাহীন।